প্রধানমন্ত্রী মোদীর ত্রিনিদাদ সফর: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে

প্রধানমন্ত্রী মোদীর ত্রিনিদাদ সফর: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে

প্রধানমন্ত্রী মোদী ত্রিনিদাদে পৌঁছেছেন। কমলা প্রসাদ-বিসেসর স্বাগত জানালেন। গার্ড অফ অনার প্রদান করা হলো। ডিজিটাল ফিনান্স, স্বাস্থ্য এবং আইটিতে সহযোগিতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে।

PM Modi: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর পাঁচ দিনের বিদেশ সফরের দ্বিতীয় পর্যায়ে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর দুদিনের সফরে পৌঁছেছেন। এই সফর ত্রিনিদাদের প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ-বিসেসরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পোর্ট অফ স্পেনের পিয়ারকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কমলা প্রসাদ তাঁর ৩৮ জন মন্ত্রী ও চারজন সাংসদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এরপর তাঁকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। এই সফর ভারত ও ত্রিনিদাদের মধ্যে সম্পর্ককে এক নতুন দিগন্তের দিকে নিয়ে যাবে।

প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর

এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রথম ত্রিনিদাদ সফর এবং ১৯৯৯ সালের পর কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এটি প্রথম সরকারি সফর। এই সফর ৩ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে এবং উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী রাষ্ট্রপতি ক্রিস্টিন কার্লা কাঙ্গালু এবং প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ-বিসেসরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন।

ভারতীয় হাইকমিশন উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে

পোর্ট অফ স্পেনে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রধানমন্ত্রী মোদীর আগমন সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে লিখেছে – "ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে আপনাকে স্বাগতম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি।" এই পোস্টের মাধ্যমে এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে যে এই সফর নিয়ে স্থানীয় সরকার ও ভারতীয় সম্প্রদায় উভয়ের মধ্যেই বিপুল উৎসাহ রয়েছে।

১৮০ বছর ধরে সাংস্কৃতিক যোগসূত্র

ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁদের শিকড় প্রায় ১৮০ বছর পুরনো। এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তিরা পঞ্চম ও ষষ্ঠ প্রজন্ম পর্যন্ত এখানে বসবাস করছেন। এই সম্প্রদায় আজও ভারতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধকে লালন করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর এই ঐতিহাসিক ও আবেগপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

হাইকমিশনার প্রদীপ সিং রাজপুরোহিতের বক্তব্য

ভারতে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর হাইকমিশনার প্রদীপ সিং রাজপুরোহিত জানিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার ও জনগণ উভয়ই ভারতের সঙ্গে গভীর ও দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার জন্য আগ্রহী। তিনি বলেন, এখানকার মানুষ ভারতের উন্নয়ন ও তার অর্জনগুলি নিবিড়ভাবে অনুসরণ করেন এবং ভারতের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।

সাধারণ স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হবে

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফরে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রধান ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে কৃষি, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি। আশা করা হচ্ছে যে এই ক্ষেত্রগুলিতে শক্তিশালী সহযোগিতা স্থাপন করে ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় চুক্তি করা হবে।

ডিজিটাল ফিনান্সে অংশীদারিত্ব

হাইকমিশনার এ কথাও উল্লেখ করেছেন যে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ক্যারিকম অঞ্চলের প্রথম দেশ যারা ভারতের ইউপিআই (Unified Payments Interface) সিস্টেম গ্রহণ করেছে। এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে এবং এটিকে ডিজিটাল ফিনান্সের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর দিকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

নতুন সরকারে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রী

ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর নতুন সরকারে অনেক মন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এটি दर्शाता যে ভারতের সংস্কৃতি ও আদর্শ এই দেশের নীতিতেও গভীরভাবে প্রোথিত। এই মন্ত্রীরা ভারতের উন্নয়ন যাত্রাকে সমর্থন করতে এবং উভয় দেশের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ভারত-ত্রিনিদাদ সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি ভারত-ত্রিনিদাদ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার একটি সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা। কৃষি, স্বাস্থ্য, আইটি, ফার্মাসিউটিক্যালস ও শক্তি-র মতো কৌশলগত ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা উভয় দেশের মধ্যে কেবল বাণিজ্য ও বিনিয়োগই বাড়াবে না, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত আদান-প্রদানকেও শক্তিশালী করবে।

Leave a comment