বিহারের রাজনীতিতে একটি নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ মুখ উঠে এসেছেন। সুপার ৩০-এর সাথে যুক্ত হয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা আনন্দ কুমারের ভাই প্রণব কুমার এখন রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-তে যোগ দিয়েছেন। বিরোধী দলের নেতা তেজস্বী যাদব তাঁকে পার্টিতে স্বাগত জানিয়েছেন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রণবের মতো শিক্ষিত এবং সামাজিকভাবে প্রভাবশালী মুখ আরজেডি-তে যোগ দেওয়ায় দল নতুন উদ্দীপনা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রণব কুমারের নতুন ইনিংস
প্রণব কুমার দীর্ঘদিন ধরে সুপার ৩০-এর মিশনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে দুর্বল কিন্তু মেধাবী ছাত্রদের বিনামূল্যে কোচিং দিয়ে আইআইটির মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য এনে দেয়। প্রণব কুমার শুধু এই মিশনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন না, তিনি শিক্ষার মাধ্যমে সমাজে বড় অবদানও রেখেছেন।
এখন যখন তিনি রাজনীতিতে পা রেখেছেন, তখন মনে করা হচ্ছে যে তিনি পাটনার কোনো বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। যদিও এখনও পর্যন্ত এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি, তবে দলের অভ্যন্তরে তাঁর সম্ভাব্য প্রার্থীপদ নিয়ে আলোচনা চলছে।
তাঁর পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি এবং সামাজিক অবদান দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, আরজেডি শহুরে ভোটারদের মধ্যে এবং বিশেষ করে যুবকদের মধ্যে এর দ্বারা বড় সুবিধা পেতে পারে।
তেজস্বী যাদবের রণনীতিতে শিক্ষিত মুখ
তেজস্বী যাদব প্রণব কুমারকে পার্টিতে অন্তর্ভুক্ত করে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আরজেডি এখন তাদের সংগঠনে এমন লোকদের জায়গা দিতে চায়, যারা শিক্ষিত, সামাজিকভাবে সক্রিয় এবং জনগণের আস্থাভাজন। এই পদক্ষেপটি দলের বর্তমান কৌশলের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যার মাধ্যমে তারা শহুরে এবং মধ্যবিত্ত ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারবে।
প্রণব কুমারের শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবী ভাবমূর্তি তাঁকে প্রথাগত নেতাদের থেকে আলাদা করে। এই কারণেই তেজস্বী যাদব তাঁকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নিজেই সদস্যপদ দিয়েছেন এবং সর্বসমক্ষে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
নীতিশ-আনন্দ সমীকরণ এবং নতুন রাজনৈতিক দিক
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত সুপার ৩০-এর প্রতিষ্ঠাতা আনন্দ কুমারের নাম মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর ভাই প্রণব কুমারের আরজেডিতে যোগদান রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপটি শুধু আরজেডিকে একটি নতুন মুখ দেয় না, বরং নীতিশ কুমারের শিবিরেও আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। এটি আরজেডি-র সেই কৌশলের অংশ, যার অধীনে তারা শিক্ষিত এবং প্রভাবশালী সামাজিক মুখদের সঙ্গে নিয়ে আগামী নির্বাচন জেতার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে যদি প্রণব কুমারকে দল টিকিট দেয়, তাহলে তাঁর ভাবমূর্তি এবং সুপার ৩০-এর বিশ্বাসযোগ্যতা আরজেডিকে শিক্ষা ও উন্নয়নের মতো বিষয়গুলিতে শক্তি যোগাতে পারে। এই পদক্ষেপ বিরোধী দলগুলোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।