উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি হরিদ্বারে কাওড়িয়াদের পা ধুইয়ে স্বাগত জানালেন, পুষ্পবৃষ্টিও করলেন, বললেন- সেবা সৌভাগ্য।
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি: হরিদ্বার, উত্তরাখণ্ডের ধর্মনগরী, এই মুহূর্তে শিবভক্তিতে মগ্ন। চারিদিকে 'বোল बम', 'হর হর মহাদেব' এবং গেরুয়া রঙের ঢেউ খেলছে। এই আবেগপূর্ণ এবং ধর্মীয় পরিবেশে একটি বিশেষ মুহূর্ত আসে, যখন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি হরিদ্বারে পৌঁছে কাওড়িয়াদের পা ধুইয়ে তাঁদের সম্মান জানান। এই দৃশ্য শুধুমাত্র শ্রদ্ধা ও সেবার প্রতীক ছিল না, বরং শিবভক্তদের প্রতি সরকারের সম্মান এবং সামাজিক সমর্পণের জীবন্ত প্রমাণও ছিল।
আস্থা ও সেবার संगम: মুখ্যমন্ত্রীর অভূতপূর্ব অভ্যর্থনা
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি যখন হরিদ্বারে পৌঁছন, তখন প্রথমে তিনি শত শত কিলোমিটার পথ হেঁটে গঙ্গা জল নিতে আসা শিবভক্তদের হাত জোড় করে স্বাগত জানান। তারপর তিনি নিজের হাতে কাওড়িয়াদের পা ধুয়ে দেন, তাঁদের মালা পরিয়ে দেন এবং ফল বিতরণ করেন। এই দৃশ্য সকলকে আবেগাপ্লুত করে তোলে। সেখানে উপস্থিত ভক্তরা মুখ্যমন্ত্রীকে আশীর্বাদ করেন এবং 'হর হর মহাদেব' ধ্বনিতে আকাশ মুখরিত করে তোলেন।
হেলিকপ্টার থেকে পুষ্পবৃষ্টি: আকাশ থেকে ঝরল শ্রদ্ধা
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হরিদ্বারে বিশেষ ব্যবস্থার অধীনে হেলিকপ্টার থেকে কাওড়িয়াদের ওপর পুষ্পবৃষ্টি করা হয়। এই দৃশ্য দেখে ভক্তদের চোখ ভিজে যায় এবং তাঁরা শিবের নামে জয়ধ্বনিতে ডুবে যান। মুখ্যমন্ত্রী ধামি বলেন, 'আমার জন্য এটা সৌভাগ্যের বিষয় যে আমি ভগবান শিবের ভক্তদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। এই যাত্রা পবিত্রও, কঠিনও। আমি ভগবান শিবের কাছে প্রার্থনা করি যেন সকল কাওড়িয়ার যাত্রা নিরাপদ ও মঙ্গলময় হয়।'
কাওড় যাত্রা का গুরুত্ব: বিশ্বাসের কঠিনতম সফর
প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে কাওড় যাত্রা এমন একটি ধর্মীয় উৎসবে পরিণত হয়, যা উত্তর ভারতের কোটি কোটি ভক্তকে একত্রিত করে। উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার, গঙ্গোত্রী এবং গোমুখের মতো তীর্থস্থান থেকে শিবভক্তরা গঙ্গা জল নিয়ে পায়ে হেঁটে নিজেদের গ্রাম-শহরে ফিরে যান এবং शिवलिंगে जलाभिषेक করেন। এইবারের যাত্রায় বিশেষ সুরক্ষা এবং পরিষেবার ব্যবস্থা করে উত্তরাখণ্ড সরকার এটিকে ভক্তদের জন্য সুবিধাজনক করার লক্ষ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ধামির বার্তা: শিবের থেকে প্রেরণা নিন, সমাজের কল্যাণ করুন
সাংবাদিকদের সঙ্গে बातचीत-এ মুখ্যমন্ত্রী ধামি বলেন, 'ভগবান শিব যখন বিশ্বের কল্যাণের জন্য হলাহল বিষ পান করেছিলেন, তখন তাঁর ভক্তদেরও তেমনই সহনশীলতা ও সেবা মনোভাব গ্রহণ করা উচিত। কাওড় যাত্রায় যদি কোনো অসুবিধা আসে, তবে তা সহ্য করুন, কিন্তু অন্যদের কষ্ট দেবেন না।' তিনি আরও বলেন যে কাওড় যাত্রার উদ্দেশ্য কেবল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নয়, বরং সংযম, সহনশীলতা ও আত্মত্যাগের বার্তা দেওয়াও। এই কারণে রাজ্য সরকার প্রতিটি স্তরে ভক্তদের জন্য আরও ভালো ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে।
দেবভূমির মর্যাদা বজায় রাখার চেষ্টা
ধামি বলেন যে উত্তরাখণ্ড শুধু একটি রাজ্য নয়, বরং 'দেবভূমি'। এর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয়কে সুরক্ষিত রাখার জন্য তাঁর সরকার ক্রমাগত চেষ্টা করছে। তিনি জানান যে রাজ্যে ধর্মান্তর, লাভ জিহাদ এবং ভূমি জিহাদের মতো সামাজিক সমস্যাগুলি রোধ করার জন্য কঠোর আইন তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, দেশে প্রথমবারের মতো উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন নাগরিক বিধি (Uniform Civil Code) लागू করে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সুরক্ষা ও সুবিধা: কাওড়িয়াদের জন্য প্রশাসনের বিশেষ নজর
মুখ্যমন্ত্রী জানান যে পুলিশ, প্রশাসন ও ত্রাণ বিভাগ একসঙ্গে কাওড়িয়াদের সম্ভাব্য সকল প্রকার সহায়তা করছে। স্বাস্থ্য শিবির, মোবাইল চিকিৎসা ইউনিট, জল বিতরণ কেন্দ্র, মোবাইল টয়লেট এবং রুট ম্যানেজমেন্টের মতো ব্যবস্থা এইবারের যাত্রাকে আরও সুসংগঠিত ও নিরাপদ করে তুলছে।