রাজস্ব মন্ত্রী জগৎ সিং নেগি বলেছেন যে রাজ্যে দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য শীঘ্রই আর্লি warning সিস্টেম (পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা) স্থাপন করা হবে। এর জন্য মন্ত্রীপরিষদ উপसमিতি এই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।
Himachal Pradesh Disaster Management: হিমাচল প্রদেশ এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চলেছে। সম্প্রতি মন্ত্রীপরিষদ উপसमিতির বৈঠকে এই বিষয়ে সম্মতি হয়েছে যে রাজ্যে আর্লি warning সিস্টেম (Early Warning System) কে শক্তিশালী এবং ব্যাপক স্তরে স্থাপন করা হবে।
এর উদ্দেশ্য হল দুর্যোগ আসার আগে সরকার এবং সাধারণ মানুষ যাতে সঠিক সময়ে সতর্ক বার্তা পায়, যাতে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি কমানো যায়।
রাজস্ব মন্ত্রী জগৎ সিং নেগি জানিয়েছেন যে এই আর্লি warning সিস্টেম আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, পূর্বাভাস এবং সতর্কবার্তার মতো তথ্য সঠিক এবং দ্রুত সরবরাহ করবে। তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরে রাজ্যে বন্যা, মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি এবং ভূমিধসের মতো দুর্যোগের ঘটনা বেড়েছে, যার ফলে শুধু জনজীবন বিপর্যস্ত হয়নি, কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি এবং বহু মূল্যবান প্রাণহানিও হয়েছে।
দুর্যোগের আগে সতর্কতা, জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি কম হবে
রাজস্ব মন্ত্রী বলেন, এই সিস্টেমের মাধ্যমে দুর্যোগের আগে অ্যালার্ট পাওয়া গেলে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের প্রস্তুতি আগে থেকেই শুরু করা যাবে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষও সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং নিরাপদ স্থানে যেতে যথেষ্ট সময় পাবে। এতে ভবিষ্যতে বড় ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে।
দুর্যোগ মোকাবিলা কৌশলকে আরও কার্যকর করতে উপसमিতি আরও একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন দুর্যোগের সময় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের জন্য সরকার হেলিকপ্টার ভাড়া নেবে। পার্বত্য অঞ্চলে প্রায়শই রাস্তাঘাট ভেঙে বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ত্রাণ কাজ ব্যাহত হয়, এমন পরিস্থিতিতে আকাশপথে জরুরি ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা এবং আটকে পড়া লোকদের নিরাপদে উদ্ধার করা সহজ হবে।
এফসিএ (বন সংরক্ষণ আইন)-এ ছাড়ের জন্য হাইকোর্টে যাবে সরকার
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে যে অঞ্চলগুলিতে সম্প্রতি বন্যা এবং ভূমিধসের কারণে ক্ষতি হয়েছে, সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, সেতু এবং জল সরবরাহ প্রকল্পের পুনর্গঠনের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করা হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে দ্রুত कार्ययोजना তৈরি করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বৈঠকে ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্যও সুখবর এসেছে। হিমাচল প্রদেশ সরকার এফসিএ (Forest Conservation Act) তে ছাড় পাওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করবে। রাজ্যের অনেক গ্রামীণ এলাকায় ছোট কৃষকদের জমির নিয়মিতকরণ সংক্রান্ত মামলা ঝুলে রয়েছে, যা বনভূমির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে আটকে আছে। এই কৃষকদের স্বার্থে এটি একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাজস্ব মন্ত্রী জগৎ সিং নেগি জানান, সরকারের প্রচেষ্টা হল ছোট কৃষকদের আইনি বাধা থেকে মুক্তি দেওয়া এবং তারা যাতে তাদের জমি অবাধে ব্যবহার করতে পারে। ভূমি নিয়মিতকরণ সংক্রান্ত ফাইল দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিশেষ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত
এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে গ্রামীণ উন্নয়ন ও পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী অনিরুদ্ধ সিং, নগর ও গ্রাম পরিকল্পনা মন্ত্রী রাজেশ ধর্মাণী, অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (রাজস্ব) কমলেশ কুমার পান্ত, বিশেষ সচিব (রাজস্ব-দুর্যোগ) ডিসি রানা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে রাজ্যে দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য বেশ কিছু প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক সংস্কার নিয়েও আলোচনা করা হয়।
হিমাচল প্রদেশ একটি পার্বত্য রাজ্য, যেখানে প্রতি বছর ভূমিধস, বন্যা, মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি এবং তুষারধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। আবহাওয়া সংক্রান্ত সঠিক তথ্য এবং সময় মতো সতর্কতা না পাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি আরও বেড়ে যায়। আর্লি warning সিস্টেম চালু হওয়ার ফলে রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি নতুন শক্তি পাবে এবং জাতীয় স্তরেও হিমাচল একটি মডেল স্টেট হিসেবে উঠে আসবে।