১৩ দিন আগে মুখ খুলেছিলেন শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে। এবার সোজা পুলিশের দ্বারস্থ হলেন সাসপেন্ডেড টিএমসিপি নেত্রী রাজন্যা হালদার। তাঁর অভিযোগ— এআই প্রযুক্তিতে বিকৃত ছবি বানিয়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে, যাতে তাঁর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হয়।
পুলিশকে জমা দিলেন বিকৃত ছবির নমুনাও
অভিযোগপত্রের সঙ্গে রাজন্যা হালদার কয়েকটি বিকৃত ছবি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, এইসব ছবি ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো হয়েছে, এবং তা অশালীন ও অপমানজনক। তিনি আরও জানিয়েছেন, এসব ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (AI)-র মাধ্যমে তৈরি এবং উদ্দেশ্য একটাই— তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় করা।
নির্দিষ্ট নাম না থাকলেও তদন্তে সহযোগিতার বার্তা
রাজন্যা অবশ্য কারও নাম অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেননি। তবে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তদন্তের প্রয়োজনে তিনি অভিযুক্তদের নাম জানাতে প্রস্তুত। তিনি পুলিশের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন এবং তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
টিএমসিপি নেতা গ্রেপ্তার হতেই অভিযোগে বিস্ফোরণ
সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার ল কলেজে এক ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় টিএমসিপি নেতা মনোজিৎ মিশ্র গ্রেপ্তার হন। এরপরেই রাজন্যা বিস্ফোরক অভিযোগ করে জানান— দলের একাংশ নেতারা দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বিরুদ্ধে এআই ছবি ছড়িয়ে তাঁকে হেনস্থা করে চলেছে। তিনি দাবি করেন, এমন ‘মনোজিৎ’ দলের মধ্যে অনেক রয়েছে।
দলকে জানালেও ফল হয়নি, পুলিশের দ্বারস্থ হতে বাধ্য
রাজন্যার দাবি, তিনি এই বিষয়ে দলের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি। বরং উল্টে তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এর পরেই সামাজিক ও রাজনৈতিক চাপে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।
ইমেলের মাধ্যমে দুই জায়গায় অভিযোগ দায়ের
শনিবার ইমেল মারফত রাজন্যা অভিযোগ দায়ের করেন সোনারপুর থানায় এবং কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখায়। তাঁর অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে সাইবার তদন্ত শুরু হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
স্বামী প্রান্তিকও একসময় অভিযোগ এনেছিলেন বিকৃত ছবির বিরুদ্ধে
রাজন্যার স্বামী এবং টিএমসিপির আরেক সাসপেন্ডেড নেতা প্রান্তিক চক্রবর্তীও কিছুদিন আগে ঠিক একই ধরনের অভিযোগে পুলিশের শরণাপন্ন হন। তাঁর অভিযোগও ছিল, তাঁর ছবি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিকৃত করা হয়েছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয়েছে।
এবার কি শুরু হবে দলীয় তদন্ত? উঠছে প্রশ্ন
একদিকে দলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, এত দিন রাজন্যা পুলিশের কাছে যাননি কেন? আবার অনেকেই বলছেন, একের পর এক নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণ করছে, সংগঠনের ভিতরে বড়সড় সমস্যা লুকিয়ে রয়েছে। এখন দেখার, এই অভিযোগের পর দল কী অবস্থান নেয়।