দাঁতেরPlak দূর করার ঘরোয়া উপায় ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

দাঁতেরPlak দূর করার ঘরোয়া উপায় ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

প্রত্যেকেরই চাওয়া থাকে তার হাসি হৃদয় জয় করুক এবং দাঁতগুলো মুক্তোর মতো চকচক করুক। কিন্তু যখন দাঁতে প্ল্যাক জমতে শুরু করে, দুর্গন্ধ বের হয় এবং দাঁত হলুদ হয়ে যায়, তখন আত্মবিশ্বাসও কমে যায়। প্ল্যাক শুধুমাত্র একটি সৌন্দর্যের সমস্যা নয়, বরং এটি দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্যেও বড় বিপদ। আসুন জেনে নেওয়া যাক প্ল্যাক কীভাবে তৈরি হয়, এর কী কী কুফল আছে এবং কোন সহজ ঘরোয়া টোটকাগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার দাঁতকে আবার আগের মতো ঝকঝকে করতে পারেন।

প্ল্যাক কী এবং কীভাবে তৈরি হয়?

প্ল্যাক হল একটি আঠালো স্তর যা আপনার দাঁতের উপরে জমে যায়। এই স্তরটি লালা, খাবারের কণা এবং ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি হয়। যখন আমরা দিনে দুবার ব্রাশ করি না বা মুখ পরিষ্কার রাখি না, তখন এই স্তর জমতে থাকে। এই প্ল্যাক ধীরে ধীরে দাঁতের উপরের স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে হলুদ করে দেয় এবং শ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।

প্ল্যাকের কারণে হওয়া সমস্যা

  • দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়া
  • মুখ থেকে দুর্গন্ধ আসা
  • মাড়িতে ফোলাভাব এবং রক্ত পড়া
  • ক্যাভিটি এবং দাঁতের ক্ষয়
  • দাঁতের গোড়া দুর্বল হয়ে যাওয়া

যদি সময় থাকতে প্ল্যাক পরিষ্কার করা না হয়, তবে এটি টারটারে পরিণত হতে পারে যা দাঁতের উপরে স্থায়ী স্তর তৈরি করে এবং প্রফেশনাল ডেন্টাল ট্রিটমেন্ট ছাড়া সরানো যায় না।

ট্যানিন যুক্ত জিনিস দাগের কারণ হয়

কফি, চা, কোলা, রেড ওয়াইন এবং তামাকের মতো পদার্থে থাকা ট্যানিন নামক রাসায়নিক দাঁতের সাদা স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই পদার্থগুলো দাঁতের সাথে লেগে থেকে ধীরে ধীরে হলদে দাগ তৈরি করে। যদি আপনি এই জিনিসগুলো বেশি পরিমাণে গ্রহণ করেন এবং সঠিক উপায়ে ব্রাশ না করেন, তাহলে প্ল্যাক এবং দাগ দুটোই একসাথে বাড়তে থাকে।

দেশি টোটকা যা দেবে মুক্তোর মতো ঔজ্জ্বল্য

১. বেকিং সোডা এবং লেবুর চমৎकारी মিশ্রণ

বেকিং সোডা দাঁতের উপরের স্তরে জমা ময়লা দূর করতে সক্ষম এবং লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচের মতো কাজ করে। এক চিমটি বেকিং সোডা, আধা চামচ লেবুর রস, সামান্য টুথপেস্ট এবং হলুদ মিশিয়ে নিন। এই পেস্ট দিয়ে দাঁতের উপরে ধীরে ধীরে ব্রাশ করুন। সপ্তাহে দুবার করলে পার্থক্য দেখতে পাবেন।

২. কমলার খোসার कमाल

কমলার খোসাতে ন্যাচারাল অ্যাসিড থাকে যা দাঁতের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। শুকনো কমলার খোসার পাউডার বানিয়ে ব্রাশের মতো ব্যবহার করুন। এটি দাঁতের দুর্গন্ধও দূর করে এবং প্ল্যাক সরাতে সাহায্য করে।

৩. পেয়ারা ও নিম পাতা

পেয়ারার তাজা পাতা চিবানো বা এর মাউথওয়াশ বানিয়ে গার্গেল করা দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নিম পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে যা মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং দাঁতকে উজ্জ্বল করে।

দাঁত পরিষ্কার করার সঠিক উপায়

  • দিনে দুবার ব্রাশ করুন – সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে
  • ব্রাশ করার সময় জিভও পরিষ্কার করুন
  • প্রতি ৩ মাসে টুথব্রাশ পরিবর্তন করুন
  • ফ্লস এবং মাউথওয়াশও ব্যবহার করুন
  • মিষ্টি এবং আঠালো খাবার খাওয়ার পরে অবশ্যই কুলি করুন

খাবারেও ध्यान রাখুন

কিছু ফল এবং সবজি যেমন আপেল, গাজর, শসা এবং স্ট্রবেরি দাঁতকে প্রাকৃতিকভাবে পরিষ্কার করে। এগুলোতে থাকা ফাইবার এবং এনজাইম দাঁতের উপরের স্তরকে পরিষ্কার রাখে এবং প্ল্যাক হতে বাধা দেয়।

ডেন্টাল চেকআপ জরুরি

প্রতি ৬ মাসে একবার ডেন্টিস্টের কাছে রুটিন চেকআপ করানো উচিত। এতে প্রাথমিক স্তরে দাঁতের যে কোনও সমস্যা ধরা পড়তে পারে এবং সময় থাকতে চিকিৎসা করানো যেতে পারে। যদি প্ল্যাকের স্তর পুরু হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে ডাক্তারের দ্বারা প্রফেশনাল স্কেলিং করানো একটি ভালো বিকল্প।

দাঁত আমাদের মুখের প্রথম পরিচয়। প্ল্যাকে ভরা, হলদে এবং দুর্গন্ধযুক্ত দাঁত শুধুমাত্র আমাদের সৌন্দর্যকেই প্রভাবিত করে না, বরং স্বাস্থ্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। সামান্য যত্ন এবং কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে আপনি আপনার দাঁতকে আবার মুক্তোর মতো ঝকঝকে করতে পারেন। তাই আজ থেকেই আপনার দাঁতের ওরাল হাইজিনের প্রতি ध्यान রাখুন এবং আপনার হাসিটিকে সুস্থ ও আত্মবিশ্বাসী করুন।

Leave a comment