বারবার হাঁটুতে ব্যথা অনেক গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে, যেমন অস্টিওআর্থারাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, গাউট বা হাড়ে ক্যালসিয়ামের অভাব। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সঠিক বসা ও ওঠার অভ্যাস গ্রহণ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
হাঁটুতে ব্যথা: হাঁটুতে ক্রমাগত ব্যথা কেবল বয়স বাড়া বা ক্লান্তির প্রভাব নয়, এটি অস্টিওআর্থারাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, গাউট বা হাড়ের দুর্বলতার মতো রোগের লক্ষণ হতে পারে। এইমসের অর্থোপেডিক অধ্যাপক ডঃ ভাবুক গার্গের মতে, তরুণ এবং মহিলাদের মধ্যেও এই সমস্যাটি সাধারণ হয়ে উঠছে। ব্যথার সাথে ফোলা, শক্ত হয়ে যাওয়া, চলাফেরায় অসুবিধা এবং শব্দ হওয়া-র মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। সময় মতো পরীক্ষা এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
হাঁটুতে ব্যথার সাথে দেখা দেওয়া লক্ষণগুলি
হাঁটুতে ক্রমাগত ব্যথার সাথে আরও অনেক লক্ষণ দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে হাঁটুতে ফোলাভাব, শক্ত হয়ে যাওয়া, সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামায় অসুবিধা, হাঁটার সময় হাঁটু থেকে শব্দ আসা এবং ব্যথার কারণে ঘুমে ব্যাঘাত। কিছু লোক হাঁটুতে জ্বালাপোড়া, উষ্ণতা বা লালচেভাবও অনুভব করেন। এই সমস্ত লক্ষণ ফোলা, আঘাত বা সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। তাই হাঁটুর ব্যথাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।
বারবার ব্যথার কারণ
এইমসের অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ডঃ ভাবুক গার্গ জানান যে, বারবার হাঁটুতে ব্যথা হওয়া বিভিন্ন রোগের সাথে যুক্ত হতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো অস্টিওআর্থারাইটিস। এতে হাড়ের মধ্যবর্তী তরুণাস্থি ক্ষয় হতে শুরু করে এবং ব্যথা বাড়ে। এই রোগ বয়স বাড়ার সাথে সাথে বেশি হয়, কিন্তু আজকাল জীবনযাপন পদ্ধতি এবং স্থূলতার কারণে তরুণদের মধ্যেও দেখা যায়।
এছাড়াও রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসও একটি সাধারণ কারণ। এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজের হাড় এবং জয়েন্টগুলোতে আক্রমণ করতে শুরু করে। এর কারণে ফোলা, শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ক্রমাগত ব্যথা বাড়তে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে গাউটও হাঁটুতে ব্যথার কারণ হতে পারে। এতে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার কারণে জয়েন্টগুলোতে ক্রিস্টাল জমে যায় এবং তীব্র ব্যথা হয়। এছাড়াও বারবার হাঁটুর ব্যথা হাড়ে ক্যালসিয়ামের অভাব, আঘাত, অতিরিক্ত ওজন বা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার মতো অভ্যাস থেকেও হতে পারে।
কখন পরীক্ষা করানো জরুরি
হাঁটুতে ব্যথা যদি ক্রমাগত থাকে বা সময়ে সময়ে ফিরে আসে, তবে সময় মতো পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। দেরিতে চিকিৎসা করালে সমস্যা বাড়তে পারে এবং চলাফেরার ক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানান যে, ব্যথার সাথে ফোলা, শক্ত হয়ে যাওয়া এবং লালচেভাবের মতো অভিযোগগুলিকে উপেক্ষা করা উচিত নয়।
প্রতিরোধের উপায়
ওজন নিয়ন্ত্রণ করা এবং অতিরিক্ত ওজন এড়িয়ে চলা হাঁটুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর এবং ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ হাড়ের দৃঢ়তা বাড়ায়। প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম জয়েন্টগুলিকে শক্তিশালী করে। বসা-ওঠা এবং হাঁটার সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করাও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। প্রয়োজনে নি-ক্যাপ বা সাপোর্ট ব্যবহার করা উপকারী হতে পারে।