তৃতীয় দিনে সাক্ষ্যগ্রহণ, আদালতে নথি পেশ না করায় সিবিআইয়ের দিকে তীব্র ক্ষোভ বিচারকের
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার তৃতীয় দিনের শুনানি পর্বে ফের চাঞ্চল্য। আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীন সিবিআই সম্পূর্ণ নথি পেশ করতে না পারায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারক। আদালতের পূর্ব নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেনও সমস্ত প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নে সিবিআইয়ের উপর চড়া সুরে কথা বলেন বিচারক।
সাক্ষী হিসেবে হাজির স্বাস্থ্য দফতরের ওএসডি, বারবার এড়িয়ে গেলেন মূল প্রশ্ন
এদিন সাক্ষ্য দেন স্বাস্থ্য দফতরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি), যিনি টালা থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত তাঁকে একাধিক প্রশ্ন করলে তিনি কিছুতেই নির্দিষ্ট উত্তর দিতে চাননি। "মনে পড়ছে না", "জানি না"— এই ধরনের উত্তরেই কেবল ঘুরপাক খাচ্ছিল গোটা জেরা পর্ব, যা বিচার প্রক্রিয়ায় প্রশ্নচিহ্নের জন্ম দেয়।
‘নথি নেই’, জানিয়ে স্পেশ্যাল পিপি, হতাশা চরমে আদালতের
জেরার মাঝেই সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী এক গুরুত্বপূর্ণ নথি পেশের অনুরোধ করেন সিবিআইকে। তখনই সিবিআইয়ের স্পেশ্যাল পাবলিক প্রসিকিউটর জানান, ওই নথি এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। শুনেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বিচারক। তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলাম সমস্ত নথি নিয়ে আদালতে উপস্থিত হতে। তদন্তে এই নথি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
সিবিআইয়ের যুক্তি: ‘অজস্র নথি আছে, সব একসঙ্গে আনা অসম্ভব’
বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে সিবিআই পক্ষ দাবি করে, মামলায় এত বিশাল সংখ্যক নথি রয়েছে যে একবারে সমস্ত কাগজ আনা কঠিন। তাদের বক্তব্য, ‘বিচারক যেটি চাইবেন, সেটি তখনই হাজির করা হবে।’ এই যুক্তি মানতে নারাজ বিচারক। তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়ায় প্রত্যেকটি নথির প্রয়োজন রয়েছে। যদি নথি নিয়েই ঘাটতি থাকে, তা হলে সত্য উদঘাটন কীভাবে সম্ভব?
সন্দীপের আইনজীবীর বক্তব্য: ‘আমরা কি আগেভাগে প্রশ্ন বলে দেব?’
এই পরিস্থিতিতে সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, আমাদের কি তবে আদালতে আগেভাগে প্রশ্ন জমা দিতে হবে, যাতে সিবিআই আগে থেকে বুঝে নথি নিয়ে আসে? এই বক্তব্য শুনে বিচারকের সপাট জবাব, কাল সমস্ত নথি নিয়ে আসতে হবে। কাল ফের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
পরবর্তী শুনানির আগে সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়াল আদালত
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ সিবিআই আদালত আজকের শুনানি স্থগিত রাখে এবং নির্দেশ দেয় যে আগামী দিনের শুনানিতে নির্ধারিত সমস্ত নথি নিয়ে হাজির হতে হবে সিবিআইকে। বিচারক স্পষ্ট করে দেন, তদন্তকারী সংস্থার উদাসীনতা বরদাস্ত করা হবে না। ফলে মামলার পরবর্তী ধাপে আরও কড়া পদক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আদালত-সূত্রে।