কল্যাণের ইস্তফার পরই তৃণমূলে বড় রদবদল শতাব্দীর কাঁধে এল বড় দায়িত্ব

কল্যাণের ইস্তফার পরই তৃণমূলে বড় রদবদল শতাব্দীর কাঁধে এল বড় দায়িত্ব

অভিষেকের নেতৃত্বে বদলের হাওয়া, শতাব্দীর উত্থান লোকসভা উপনেতার পদে

সোমবার তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই শুরু হয় দলের সংসদীয় গঠনতন্ত্রে বড়সড় রদবদলের অধ্যায়। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই দলীয় শিবিরে সঞ্চারিত হয় উত্তাপ। এরই মধ্যে মুখ্যসচেতকের পদ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা নতুন করে উত্তাপ ছড়ায়। আর এই পরিস্থিতিতে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় পেলেন এক গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব—তৃণমূলের লোকসভা উপনেতার পদ।

লোকসভায় নতুন মুখ্যসচেতক কাকলি, উপনেতা শতাব্দী—নারী নেতৃত্বে বার্তা তৃণমূলের

দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার পর লোকসভায় মুখ্যসচেতকের দায়িত্ব পাচ্ছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। একই সঙ্গে, দীর্ঘদিন পর শতাব্দী রায়কে দেওয়া হল উপনেতার গুরুদায়িত্ব। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কল্যাণ-মহুয়া বিবাদের আবহে একসঙ্গে দুই মহিলা সাংসদকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এতে দলীয় ঐক্যের বার্তাও দেওয়া হল।

দীর্ঘদিন ধরে সাংসদ হলেও, এতদিন দিল্লিতে ছিলেন ছায়ায়—এবার সম্মুখ সারিতে শতাব্দী

২০০৯ সাল থেকে বীরভূম থেকে চার বার সাংসদ নির্বাচিত শতাব্দী রায়। তাঁর সাংসদ জীবনের প্রায় ১৬ বছর কেটে গেলেও, এতদিন পর্যন্ত লোকসভায় বা দলের কেন্দ্রীয় সংগঠনে বড় কোনও দায়িত্ব তাঁর ভাগ্যে জোটেনি। এমনকি সংসদে আলোচনার সময়ও তিনি সাধারণত পেছনের সারিতে থাকতেন। কিন্তু এবার সেই ট্রেন্ড ভেঙে সামনে এলেন শতাব্দী। তাঁকে লোকসভার উপ দলনেতা করায় বোঝা গেল, দল এখন অভিজ্ঞ ও দীর্ঘদিনের সাংসদদের কাজে লাগাতে প্রস্তুত।

কল্যাণ-মহুয়া বিতর্কে দগ্ধ দল, রদবদলের মধ্যে দিয়ে বার্তা দিতে চায় নেতৃত্ব

সম্প্রতি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্রের সংঘাত প্রকাশ্যে আসে। একে কেন্দ্র করে বারবার বিতর্কে জড়ায় তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে দুই শক্তিশালী মহিলা সাংসদ কাকলি ও শতাব্দীকে সামনে এনে দল যেন ইঙ্গিত দিল—তৃণমূলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থান থাকবে। সেই সঙ্গে বিতর্ক থেকে বেরিয়ে নতুন মুখ ও কাঠামোর উপর ভরসা রাখতেই নেতৃত্বের এই পরিবর্তন।

মহুয়া জানালেন খুশি, দুই সিনিয়র সহকর্মীকে অভিনন্দন তাঁর

নতুন দায়িত্বে কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং শতাব্দী রায়ের নাম ঘোষণা হতেই প্রকাশ্যে এল শুভেচ্ছাবার্তা। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, "দুই সিনিয়র সহকর্মীকে অভিনন্দন জানাই। তাঁরা দলের সাংসদ গোষ্ঠীকে নতুন নেতৃত্বে শক্তি যোগাবেন বলে আমি আশাবাদী।" দলীয় ঐক্যের বার্তা ফের একবার প্রকাশ্যে আনতে চাইলেন মহুয়া, যা দলের অভ্যন্তরে সদর্থক আবহ তৈরি করতে পারে।

Leave a comment