শুধু মাতাল করা নয়, রামের শরীরে রয়েছে এমন কিছু গুণ যা সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীরকে রক্ষা করতে পারে একাধিক মারাত্মক রোগ থেকে। চিকিৎসকেরা বলছেন, রামের মধ্যে আছে এমন উপাদান যা শরীরে নানা শারীরিক সমস্যা দূর করতে সহায়ক, তবে অতিরিক্ত খাওয়াই সবচেয়ে বড় বিপদ।
ক্যানসার থেকে হার্ট অ্যাটাক—১০ রোগের বিরুদ্ধে রামের লড়াই
গবেষণা জানাচ্ছে, সঠিক নিয়মে ও পরিমিত রাম পান করলে ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক সহ অন্তত ১০টি রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তবে নিয়ম ভাঙলেই পরিস্থিতি উলটে যেতে পারে। মদ্যপানের ক্ষেত্রে সঠিক মাত্রাই আসল চাবিকাঠি।
সতর্কতা সঙ্গী করেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
রাম খেলে প্রথমে কিছুটা ঝিমুনি আসতে পারে, তবে সেটিই শরীরের রিল্যাক্সেশনের অংশ। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যালকোহলগুলির মধ্যে রামের নাম শীর্ষে। শুধু স্বাদ নয়, সঠিকভাবে গ্রহণ করলে রামের রয়েছে স্বাস্থ্যরক্ষার গোপন ক্ষমতা।
আখের রসে তৈরি ক্যারিবিয়ানের ‘গ্লুটেন-মুক্ত’ সুধা
রামের জন্ম ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। আখের রস থেকে তৈরি এই অ্যালকোহল মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোতেও উৎপাদিত হয়। পুরনো রাম যেমন গভীর বাদামি রঙের হয়, তেমনি বাজারে পাওয়া যায় লাল ও হলুদ রঙের ভ্যারিয়েন্টও। ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্যারিবিয়ানরা এটি তৈরি করছে।
‘ওল্ড মঙ্ক’-এর কিংবদন্তি গল্প
ভারতীয় বাজারে রামের রাজা বলা হয় ‘ওল্ড মঙ্ক’-কে। ১৯৫৪ সালে কপিল মোহন তৈরি করেন এই ব্র্যান্ড, যা সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে। তার হাত ধরেই ভারতীয় রাম পেয়েছিল আন্তর্জাতিক পরিচিতি।
হৃদযন্ত্রের জন্য ‘ডাবল-এজড সোর্ড’
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জন স্মিথের মতে, পরিমিত অ্যালকোহল সেবন রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে পারে, কিন্তু মাত্রা ছাড়ালেই হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণ। অর্থাৎ ওষুধ হতে হলে চাই সংযম।
৪০ থেকে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহলের সঙ্গী কোকের কম্বিনেশন
রামের অ্যালকোহল মাত্রা সাধারণত ৪০-৬০ শতাংশ। অনেক দেশে এটি কেবল মদ নয়, পানীয় হিসেবেও জনপ্রিয়—যেমন রাম ও কোকের মিশ্রণ। তবে মাত্রা অতিক্রম করলেই ক্ষতি নিশ্চিত।
পেশি ও জয়েন্টের ব্যথায় আরামদায়ক ভূমিকা
অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. রিচার্ড রো বলছেন, পরিমিত রাম পান পেশির রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, যা জয়েন্ট ও পেশির ব্যথা কমাতে সহায়ক। তবে এটি সাময়িক সমাধান, দীর্ঘমেয়াদি নয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক
রামের ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে। ফলে নানা রোগের সম্ভাবনা কমে যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও সঠিক মাত্রা অপরিহার্য।
চিকিৎসকের সতর্কতা—ওষুধ নয়, সহায়ক মাত্র
ডাক্তারদের মতে, পরিমিত রাম পান ওষুধের মতো কাজ করলেও, এটিকে কখনওই মূল চিকিৎসার বিকল্প ভাবা উচিত নয়। বাড়তি মাত্রা মানেই বিপদ।
মদ্যপানের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি
সব শেষে মনে রাখা দরকার—রাম হোক বা অন্য কোনও অ্যালকোহল, চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ সঠিক মাত্রা ভুলে গেলে, ‘মহৌষধ’ মুহূর্তে হয়ে উঠতে পারে ‘মারাত্মক বিষ’।