সল্টলেক সংবাদ: বিধাননগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হতেই বদলে গেল দৃশ্যপট। আগে যেখানে ডেঙ্গি সমীক্ষা বা পোলিও টিকাকরণে পৌরকর্মীদের প্রবেশ আটকানো হতো, সেখানে এখন BLO–দের জন্য খুলে যাচ্ছে দরজা। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ১১টি ওয়ার্ডে এবার অসাধারণ সাড়া মিলছে। বাসিন্দারা ফোন করে জানতে চাইছেন, “স্যররা কবে ফর্ম আনবেন?”— এমন সৌজন্য আগে দেখা যায়নি।

পুরনিগম কর্মীদের ‘অভ্যর্থনা’ বদলে দিল SIR ফর্ম
একসময় সল্টলেকের বহু আবাসনে পৌরকর্মীরা ঢুকতে পারতেন না। দরজার ফাঁক দিয়ে বলা হতো—‘কোনও দরকার নেই’। কিন্তু এবার সেই দৃশ্য উল্টো। SIR (Summary Intensive Revision) ফর্ম বিলি শুরু হতেই BLO–দের ঘরে ডেকে নিচ্ছেন বাসিন্দারা। কেউ দিচ্ছেন জলখাবার, কেউ আবার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন সহানুভূতির সঙ্গে।
প্রশাসনের দাবি, সল্টলেকে ‘অভূতপূর্ব’ সাড়া
বিধাননগরের মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দার জানিয়েছেন, “সল্টলেকে এবার মানুষের আগ্রহ নজিরবিহীন। BLO–রা কখন আসবেন, তা জানতে বারবার ফোন করছেন অনেকে।” তাঁর মতে, ভোটার তালিকা হালনাগাদে এই জনসচেতনতা প্রশাসনের পক্ষে বড় ইতিবাচক বার্তা।
একসময়ের নিষিদ্ধ আবাসনে এখন হাসিমুখে স্বাগত
বিধাননগরের এবি, এডি, বিএল, সিএল ও এফডি ব্লক—যেখানে আগে পৌরকর্মীরা ‘গলাধাক্কা’ খেতেন, সেই সব জায়গায়ই এবার উষ্ণ অভ্যর্থনা পাচ্ছেন BLO–রা। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের এক BLO জানান, “মানুষ নিজেরাই ফোন করছেন জানতে, কবে যাব। এমন অভিজ্ঞতা সত্যিই বিরল।

দ্রুত চলছে ফর্ম বিলি, নজির গড়ার পথে বিধাননগর
ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল বলেন, “প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই উৎসাহ চোখে পড়ছে। আমরা নিজেরাও ক্যাম্পে বসে সাহায্য করছি।” ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলো দত্ত জানালেন, “৮,৮৮৪ ভোটারের মধ্যে মাত্র ছ’দিনে চার হাজারের বেশি ফর্ম বিলি হয়েছে।”
নাগরিক সৌজন্যে বদলাচ্ছে শহরের মানচিত্র
এই বদল শুধু প্রশাসনিক নয়, সামাজিকও। একসময় নাগরিক ও পৌরকর্মীদের দূরত্ব ছিল প্রকট, এবার সেই দেওয়াল ভাঙছে সৌজন্যে। BLO–দের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা, চা-জল দেওয়া—সল্টলেকের নাগরিক আচরণের এক নতুন অধ্যায়।

আগে যেখানে পুরনিগম কর্মীদের গেটের বাইরে ফেরত পাঠানো হতো, সেখানে এখন সল্টলেকবাসী নিজেরাই ফোন করে ডেকে নিচ্ছেন BLO–দের। ‘স্যররা কবে ফর্ম নিয়ে আসবেন?’— এই প্রশ্ন এখন ঘরে ঘরে। প্রশাসনের দাবি, SIR ফর্ম বিলিতে মিলছে অভূতপূর্ব সাড়া।












