সত্যানন্দ ভোক্তা: আরজেডিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ, লালু প্রসাদের আস্থা

সত্যানন্দ ভোক্তা: আরজেডিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ, লালু প্রসাদের আস্থা

ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা গেছে। প্রাক্তন মন্ত্রী সত্যানন্দ ভোক্তা রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-তে বড় দায়িত্ব পেয়েছেন। হেমন্ত সোরেন এবং চম্পাই সোরেনের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী থাকা ভোক্তা-র উপর আবারও আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব ভরসা রেখেছেন।

Satyanand Bhokta: রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে অভিজ্ঞ নেতা সত্যানন্দ ভোক্তাকে রাজ্যের প্রধান মহাসচিব নিযুক্ত করেছে। এই নিয়োগটি করেছেন দলের জাতীয় সভাপতি লালু প্রসাদ যাদব। বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর আগে এই সিদ্ধান্তটি পার্টি সংগঠনকে শক্তিশালী করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সত্যানন্দ ভোক্তা ঝাড়খণ্ড সরকারের মন্ত্রী ছিলেন এবং চतरा বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন।

কে এই সত্যানন্দ ভোক্তা?

সত্যানন্দ ভোক্তা ১৯৭২ সালের ২ মে ঝাড়খণ্ডের চतरा জেলার কারি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম স্বর্গীয় জগন্নাথ ভোক্তা এবং মায়ের নাম রমণী দেবী। তাঁর স্ত্রীর নাম পরমা দেবী এবং তিনি চার পুত্রের জনক। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে একজন অভিজ্ঞ এবং শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।

  • বিজেপি থেকে শুরু: সত্যানন্দ ভোক্তা তাঁর রাজনৈতিক জীবন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) থেকে শুরু করেছিলেন। তিনি ২০০০ সালে চतरा বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচন লড়ে আরজেডি-র প্রার্থী জনার্দন পাসোয়ানকে হারিয়ে বিধায়ক হন।
  • প্রথমবার মন্ত্রী পদ: ২০০৩ সালে তিনি প্রথমবার ঝাড়খণ্ড সরকারের পানীয় জল ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী হন। এর এক বছর পরেই মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার কার্যকালে তাঁকে কৃষি ও আখ উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
  • ২০০৫ সালের নির্বাচন: ২০০৫ সালে তিনি আবারও বিজেপির টিকিটে নির্বাচন লড়েন এবং জয়লাভ করেন। তিনি পরপর দ্বিতীয়বার বিধায়ক নির্বাচিত হন এবং সরকারের মন্ত্রী থাকেন।

রাজনীতিতে উত্থান-পতন

  • ২০০৯ সালে হার: সত্যানন্দ ভোক্তা ২০০৯ সালে সিমারিয়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে নির্বাচন লড়েন, কিন্তু জেভিএম-এর জয়প্রকাশ সিং ভোক্তা-র কাছে পরাজিত হন।
  • ২০১৪ সালে দলবদল: বিজেপি থেকে টিকিট না পাওয়ায় তিনি ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা (ঝাভিমো)-তে যোগ দেন এবং চतरा থেকে নির্বাচন লড়েন, কিন্তু হেরে যান।

আরজেডিতে প্রত্যাবর্তন ও নতুন সাফল্য

  • ২০১৯ সালে আরজেডিতে যোগদান: সত্যানন্দ ভোক্তা ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ঝাভিমো ছেড়ে আরজেডিতে যোগ দেন। ওই বছর বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি তাঁকে চतरा থেকে প্রার্থী করে।
  • জনार्दन पासवान-কে पराजित করেন: এই নির্বাচনে তিনি আবারও বিজেপির জনार्दन पासवान-কে হারিয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হন।
  • আরজেডির একমাত্র বিধায়ক: ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সত্যানন্দ ভোক্তা আরজেডি কোটা থেকে একমাত্র বিধায়ক হয়ে ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় পৌঁছন।

আরজেডিতে পদবৃদ্ধি: প্রধান মহাসচিবের দায়িত্ব

সত্যানন্দ ভোক্তার অভিজ্ঞতা এবং সংগঠনের উপর তাঁর দখল দেখে এখন আরজেডি সুপ্রিমো লালু যাদব তাঁকে ঝাড়খণ্ড প্রদেশ আরজেডির প্রধান মহাসচিব নিযুক্ত করেছেন। এই বিষয়ে পার্টির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। তাঁর এই নিয়োগ শুধুমাত্র ঝাড়খণ্ডে আরজেডি সংগঠনকে শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দেয় না, বরং এটিও দর্শায় যে পার্টি তাঁকে আগামী নির্বাচনে একটি বড় ভূমিকায় দেখতে চায়।

এই প্রথমবার নয় যে লালু যাদব সত্যানন্দ ভোক্তার উপর ভরসা রেখেছেন। ২০১৯ সালে তাঁকে পার্টিতে অন্তর্ভুক্ত করে বিধানসভা টিকিট দেওয়া হয়েছিল এবং এখন পার্টি সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলির মধ্যে একটি ‘প্রধান মহাসচিব’-এর দায়িত্ব অর্পণ করে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে ভোক্তা পার্টিতে উচ্চ স্থান অধিকার করেন।

বিহার নির্বাচন ২০২৫-এর আগে আরজেডি তাদের সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে जुटে গেছে। ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্য, যেখানে পার্টির উপস্থিতি সীমিত, সেখানে সত্যানন্দ ভোক্তার মতো অভিজ্ঞ নেতাদের সামনে এনে পার্টি তাদের ভিত্তি বাড়ানোর কৌশল নিয়ে কাজ করছে।

Leave a comment