আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আদালত অবমাননার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিনি গত বছর থেকে ভারতে নির্বাসনে রয়েছেন।

Bangladesh: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনাকে আদালত অবমাননার একটি মামলায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ। এই বেঞ্চের প্রধান ছিলেন বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদার। এই রায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি বড় আইনি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ

শেখ হাসিনাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে একটি কথিত অডিও কলের ভিত্তিতে, যা গত বছর অক্টোবরে সামনে এসেছিল। এই অডিওতে হাসিনার মতো শোনা যায়, "আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা করা হয়েছে, তাই আমি ২২৭ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি"। প্রসিকিউশন এই বক্তব্যকে বিচার বিভাগের প্রতি চরম অবমাননাকর হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং এটিকে বিচারিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার মতো বলেছে।

শহীদুল আকন্দ বুলবুলকেও সাজা

ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার পাশাপাশি ঢাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শহীদুল আকন্দ বুলবুলকেও দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। বুলবুল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে এসেছেন এবং তিনি আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ছাত্রলীগ)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁকেও একই অডিও কলের ভিত্তিতে আদালত অবমাননার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং ভারতে আশ্রয়

এই ঘটনা এমন সময়ে সামনে এসেছে যখন শেখ হাসিনা গত এক বছর ধরে দেশের বাইরে রয়েছেন। বাংলাদেশে আগস্ট ২০২৪-এ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ হয়। এই বিক্ষোভের সময় সহিংস সংঘর্ষ এবং প্রশাসনিক অস্থিরতার মধ্যে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। খবর অনুযায়ী, তিনি নতুন দিল্লিতে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন।

অডিও কল বাড়িয়েছে সমস্যা

যে অডিও কল থেকে এই পুরো বিতর্কের সূত্রপাত, সেটি ফাঁস করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়েছিল। কলে কথিতভাবে শেখ হাসিনা এবং শহীদুল আকন্দ বুলবুলের মধ্যে কথোপকথন হয়েছিল। এতে বিচার বিভাগ এবং চলমান মামলাগুলি নিয়ে তীব্র মন্তব্য করা হয়েছিল। প্রসিকিউশন যুক্তি দিয়েছিল যে এই বক্তব্যগুলি সেই মামলাগুলিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা, যা ব্যাপক দেশব্যাপী বিদ্রোহের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ট্রাইব্যুনালের প্রক্রিয়া

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বেঞ্চ উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এই রায় দিয়েছে। আদালত বলেছে যে এই ধরনের বিবৃতি কেবল বিচার প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলে না, বরং সমাজে আইনের প্রতি অবিশ্বাসের জন্ম দেয়। আদালত এটিকে গুরুতর অবমাননার মামলা হিসেবে বিবেচনা করে সাজা নির্ধারণ করেছে।

Leave a comment