শিবু সরেনের প্রয়াণে হেমন্ত সরেনের আবেগঘন বার্তা

শিবু সরেনের প্রয়াণে হেমন্ত সরেনের আবেগঘন বার্তা

শি signalingবু সরেনের প্রয়াণের পর হেমন্ত সরেনের একটি আবেগঘন পোস্ট। তিনি পিতার সংগ্রাম, আদর্শ এবং ঝাড়খণ্ডের প্রতি তাঁর নিষ্ঠাকে স্মরণ করেছেন এবং অঙ্গীকার করেছেন যে তিনি সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

Jharkhand: ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (JMM)-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবু সরেন সোমবার দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর বয়স ছিল ৮১ বছর এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সংক্রান্ত রোগে ভুগছিলেন। তাঁর প্রয়াণের খবরে গোটা ঝাড়খণ্ডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আজ তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হচ্ছে।

পুত্র হেমন্তের সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগপূর্ণ বার্তা

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন তাঁর বাবাকে স্মরণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, "আমি আমার জীবনের কঠিনতম দিনগুলোর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমার মাথার ওপর থেকে শুধু পিতার ছায়া সরে যায়নি, ঝাড়খণ্ডের আত্মার স্তম্ভ চলে গেল।"

হেমন্ত আরও লিখেছেন যে তিনি তাঁর বাবাকে শুধু বাবা বলে ডাকতেন না। তিনি ছিলেন তাঁর পথপ্রদর্শক, তাঁর আদর্শের ভিত্তি এবং সেই জঙ্গলের মতো ছায়া যা হাজার হাজার-লক্ষ লক্ষ ঝাড়খণ্ডবাসীকে অবিচার ও যন্ত্রণা থেকে বাঁচিয়েছে।

সংগ্রামের শিকড় শৈশব থেকে

হেমন্ত সরেন লিখেছেন যে বাবার জীবন খুব সাধারণ ছিল। তিনি নেমরা গ্রামের একটি ছোট বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন যেখানে দারিদ্র্য, ক্ষুধা এবং সংগ্রাম ছিল। তিনি শৈশবেই তাঁর পিতাকে হারিয়েছিলেন। জমিদারি প্রথার শোষণ তাঁর মধ্যে এমন এক আগুন হয়ে জ্বলেছিল যা তাঁকে সারা জীবন সংগ্রামশীল করে রেখেছিল।

জননেতার আসল রূপ

হেমন্ত জানিয়েছেন যে তিনি তাঁর বাবাকে লাঙল চালাতে, সাধারণ মানুষের মধ্যে বসতে এবং তাঁদের সমস্যাগুলি বুঝতে দেখেছেন। তিনি কেবল ভাষণ দেওয়া নেতা ছিলেন না বরং জনগণের দুঃখ নিজের মধ্যে ধারণ করতেন। শৈশবের একটি ঘটনা স্মরণ করে তিনি লিখেছেন, “আমি যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করতাম যে বাবা, লোকেরা আপনাকে দিশম গুরু কেন বলে? তখন তিনি হেসে বলতেন- বেটা, আমি মানুষের দুঃখ বুঝেছি এবং সেটাকে আপন করে নিয়েছি। এই কারণেই এই উপাধি সংসদ নয়, ঝাড়খণ্ডের জনগণ দিয়েছে।”

দিশম গুরুর সংজ্ঞা

‘দিশম’-এর অর্থ হল সমাজ এবং ‘গুরু’ অর্থাৎ পথপ্রদর্শক। হেমন্ত বলেছেন যে বাবা শুধু পথ দেখাননি, মানুষকে চলতে শিখিয়েছেন। তিনি তাঁর বাবাকে বড় নেতাদের সঙ্গে লড়াই করতে দেখেছেন। তিনি কখনও ভয় পেতেন না। সবসময় বলতেন- “যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো অপরাধ হয়, তবে আমি বার বার দোষী হব।”

একটি রাজ্য নয়, পরিচয়ের স্বপ্ন

হেমন্ত লিখেছেন যে ঝাড়খণ্ড রাজ্য তৈরি হওয়া বাবার স্বপ্ন ছিল। যখন রাজ্য গঠিত হয়, তখন তিনি কখনও এটাকে ক্ষমতা বা চেয়ারের সঙ্গে যুক্ত করে দেখেননি। তিনি বলতেন যে এই রাজ্য আমার কাছে পদ নয়, আমার জনগণের পরিচয়।

পিতার শিক্ষাই শক্তি

হেমন্ত লিখেছেন যে তাঁর বাবা তাঁকে শিখিয়েছেন লড়তে, নতি স্বীকার করতে নয়। তিনি তাঁর থেকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসতে শিখেছেন। আজ বাবা আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু ঝাড়খণ্ডের প্রতিটি পথ, প্রতিটি মাঠ, প্রতিটি ঢোলের আওয়াজ এবং প্রতিটি দরিদ্রের চোখে তিনি বাস করেন।

Leave a comment