কলেজে ধর্ষণকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই বন্ধ হয়ে গেল পঠনপাঠন।

কলেজে ধর্ষণকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই বন্ধ হয়ে গেল পঠনপাঠন।

কসবার বিতর্কিত আইন কলেজে তালা পড়ার জেরে এবার প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। জানালেন, কলেজে পাঠদান চালু থাকার কথা, পরিচালন সমিতি কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নিল তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি আশাবাদী স্বরে বলেন, ছাত্রছাত্রীরা দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসবে বলেই আশা করি।

পুলিশি তদন্ত চললেও বন্ধ কলেজের ক্লাসঘর। মূল অভিযুক্তেরা এই মুহূর্তে পুলিশ হেফাজতে। অন্যদিকে কলেজে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া অব্যাহত।

কিন্তু কলেজ চত্বরে প্রবেশাধিকার নেই পড়ুয়াদের। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আশা জাগাল অভিভাবক মহলে। অভিযোগ উঠছে, পরিচালন সমিতি নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, অথচ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

পরিচালন সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, ছাত্রদের নিরাপত্তা এবং তদন্তে সহায়তার স্বার্থেই কলেজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। 

কলেজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে এই নির্দেশ। অথচ এই সিদ্ধান্তেই ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা—সিলেবাস শেষ হবে কীভাবে, পড়াশোনার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? সময়ের মধ্যে পরীক্ষা হবে তো?এই আবহেই ফের মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বললেন, কলেজে পাঠদান স্বাভাবিক থাকা উচিত। পরিচালন সমিতি কেন এ সিদ্ধান্ত নিল, তা খোঁজ নিচ্ছি। বিকাশ ভবন এখনও কিছু জানায়নি ঠিকই, তবে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁর মন্তব্যে ইঙ্গিত মিলল—সরকার চাইছে কলেজে পঠনপাঠন দ্রুত শুরু হোক।

পাশাপাশি, কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি অশোক দেব জানিয়েছেন, আগের দিনের বৈঠকে সদস্যদের সম্মতিতে কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। 

তবে খুব শীঘ্রই নতুন বৈঠক বসছে এবং সেখানে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা চূড়ান্ত হবে। কলেজ ঘিরে বর্তমানে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত না হলে ক্লাস চালু করা ঝুঁকিপূর্ণ বলেই মনে করছেন তাঁরা।

পরিচালন সমিতির অন্যতম সদস্য ডঃ শিবরঞ্জন চ্যাটার্জিও স্বীকার করেছেন, পুলিশ বিল্ডিং সিল করে রাখায় ক্লাস চালানো যাচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই ক্লাস চালু হবে। অনলাইন ক্লাসের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। শিক্ষকেরা যদি ইচ্ছুক হন, তা হলে তৎক্ষণাৎ ডিজিটাল পাঠদান শুরু করা যেতে পারে।

তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—একটা সমগ্র কলেজের একাডেমিক ভবিষ্যৎ কীভাবে টিকে থাকবে এমন অস্থির পরিবেশে? 

বিকাশ ভবনের তরফে এখনও কোনও দিশা না মিললেও, শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আশার আলো দেখছে পড়ুয়ারা। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দায় এখন কেবল প্রশাসনিক সদিচ্ছার ওপরে নির্ভর করছে।

Leave a comment