সামরিক প্রশিক্ষণের সময় দিব্যাঙ্গ (শারীরিকভাবে অক্ষম) ক্যাডেটদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ। কেন্দ্রকে অনুদান বাড়ানো এবং পুনর্বাসন পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ। আদালতের বক্তব্য, দিব্যাঙ্গতা যেন সেনাবাহিনীতে বাধা না হয়।
New Delhi: সামরিক প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের সময় দিব্যাঙ্গ হয়ে যাওয়া অফিসার ক্যাডেটদের অসুবিধাগুলি সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে নজরে এনেছে। আদালত কেন্দ্র এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে জিজ্ঞাসা করেছে যে এই ক্যাডেটদের জন্য এখন পর্যন্ত কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে তাদের পুনর্বাসনের জন্য কী পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
দিব্যাঙ্গ ক্যাডেটদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ
সামরিক প্রশিক্ষণ বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন প্রোগ্রামগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। এনডিএ (National Defence Academy), আইএমএ (Indian Military Academy) এবং অন্যান্য সামরিক প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর হাজার হাজার তরুণ ক্যাডেট দেশের সেবার জন্য প্রশিক্ষণ নেয়। কিন্তু এই সময় অনেক গুরুতর আঘাত বা অক্ষমতা ঘটে, যার কারণে তাদের চিকিৎসার ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতি তাদের কর্মজীবন এবং ভবিষ্যৎ উভয়ের উপরই প্রশ্ন তোলে।
বিচারকদের বেঞ্চ এবং শুনানি
এই মামলার শুনানি বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি আর মহাদেভনের বেঞ্চে হয়। তাঁরা কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছেন যে ক্যাডেটদের জন্য এমন পরিস্থিতিতে বিমা কভারেজ দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হোক। যাতে কোনও ক্যাডেট প্রশিক্ষণের সময় আঘাত বা দিব্যাঙ্গ হলে সে এবং তার পরিবার সুরক্ষিত বোধ করতে পারে।
অনুদান বাড়ানোর সুপারিশ
বর্তমানে দিব্যাঙ্গ হলে ক্যাডেটদের চিকিৎসার খরচ বাবদ মাত্র ৪০,০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। আদালত এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছে যে বর্তমান পরিমাণ অপ্রতুল। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটিকে আদালত বলেছেন যে কেন্দ্র সরকার যেন এই পরিমাণ বাড়ানোর কথা বিবেচনা করে যাতে ক্যাডেটরা আরও ভালো চিকিৎসা সুবিধা পেতে পারে।
পুনর্বাসন পরিকল্পনার উপর জোর
সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র অনুদান নয়, পুনর্বাসন পরিকল্পনা তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছে। আদালত পরামর্শ দিয়েছে যে চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরে এই ক্যাডেটদের ডেস্ক জব বা প্রতিরক্ষা পরিষেবা সম্পর্কিত অন্যান্য দায়িত্ব দেওয়া উচিত। এইভাবে তারা তাদের কর্মজীবন চালিয়ে যেতে পারবে এবং দেশের সেবায় অবদান রাখতে পারবে।
‘দিব্যাঙ্গতা বাধা হওয়া উচিত নয়’
আদালত আরও বলেছে যে সাহসী ক্যাডেটরা যারা কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে, তাদের শুধুমাত্র আঘাত বা অক্ষমতার কারণে বাদ দেওয়া উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্ট মনে করে যে Disability should not be a barrier। এই ধরনের ক্যাডেটদের সেনাবাহিনীতে উপযুক্ত ভূমিকা দেওয়া উচিত যাতে তাদের মনোবল বজায় থাকে।
কবে পরবর্তী শুনানি
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৪ সেপ্টেম্বর হবে। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট ১২ আগস্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই বিষয়টি নজরে এনেছিল। একটি মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে যে এনডিএ এবং আইএমএর মতো শীর্ষ সামরিক প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণরত অনেক ক্যাডেট আহত হয়ে বাদ পড়েছেন এবং তারা যথাযথ সাহায্য পাননি। এর পরে আদালত অবিলম্বে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।