বিকানেরের শ্রীডুংগারগড়ে খেলার সময় ১১ বছর বয়সী এক ছাত্রের টাই দেওয়ালে আটকে দমবন্ধ হয়ে মারা গেছে। স্কুল থেকে ফিরে সে তার ভাইয়ের সাথে উঠোনে খেলছিল। দুর্ঘটনাটি এতটাই আকস্মিক ছিল যে পরিবারের সদস্যরা কিছুই বুঝতে পারেনি।
Uniform Tie Accident: রাজস্থানের বিকানের জেলার শ্রীডুংগারগড় শহর থেকে একটি মর্মান্তিক খবর सामने এসেছে। এখানে স্কুল থেকে ফেরা এক ১১ বছর বয়সী নিষ্পাপ শিশু খেলতে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে মারা গেছে। এই দুর্ঘটনাটি এতটাই অস্বাভাবিক এবং হৃদয়বিদারক যে শুনলে চোখ ভিজে আসে। বাড়ির উঠোনে তার ছোট ভাইয়ের সাথে খেলার সময়, এই নিষ্পাপ শিশুটির টাই একটি দেওয়ালের খুঁটিতে আটকে যায় এবং সেই টাইটিই তার শ্বাসরোধকারী ফাঁসি হয়ে দাঁড়ায়।
ঘটনার শুরু: স্কুল থেকে ফিরে খেলার আনন্দ
গুঁসাইসর বড় গ্রামের বাসিন্দা পেমারাম প্রজাপতের নাতি কানারাম প্রতিদিনের মতো শুক্রবার দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে। সে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিল এবং পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল বলে মনে করা হতো। বাড়ি ফিরেই স্কুলের পোশাক না খুলেই সে তার ছোট ভাইয়ের সাথে উঠোনে খেলতে শুরু করে। তার মা রান্নাঘরে দুপুরের খাবার তৈরি করছিলেন এবং বাচ্চাদের খেলার দিকে সেভাবে খেয়াল করতে পারছিলেন না।
টাই হয়ে দাঁড়ালো মারণফাঁদ
খেলার সময় হঠাৎ এমন কিছু ঘটে গেল যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। কানারামের গলায় বাঁধা স্কুলের টাই খেলার সময় দেওয়ালে লাগানো একটি লোহার খুঁটিতে আটকে যায়। সে খেলার মধ্যে এতটাই মগ্ন ছিল যে বুঝতে পারেনি তার টাই ক্রমশ শক্ত হয়ে আসছে। যতক্ষণ না সে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে, টাই তার দম বন্ধ করে দিয়েছে। সে বারবার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু আটকে যায়।
ভাইয়ের চিৎকার এবং মায়ের দৌড়, কিন্তু সবই ব্যর্থ
কানারামের কষ্ট দেখে তার ছোট ভাই ঘাবড়ে যায় এবং জোরে জোরে চিৎকার করতে শুরু করে। রান্নাঘরে রান্না করা মা তৎক্ষণাৎ দৌড়ে উঠোনে আসেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। কানারামের চোখ বন্ধ হয়ে গেছে এবং শরীর নিস্তেজ হয়ে গেছে। মা তড়িঘড়ি করে টাই খুলে ফেলেন এবং প্রতিবেশীদের সাহায্যে তাকে শ্রীডুংগারগড়ের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রামে শোকের ছায়া, শত শত মানুষ শোক জানিয়েছেন
খবরটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই পেমারাম প্রজাপতের বাড়িতে শোক জানাতে আসা মানুষের ভিড় জমে যায়। পুরো গ্রাম এই দুঃখজনক ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে যায়। কেউ বিশ্বাস করতে পারছিল না যে খেলতে খেলতে একটি নিষ্পাপ শিশুর জীবন চলে গেল। স্কুল প্রশাসন ও গ্রামের শিক্ষকরাও পরিবারের কাছে যান এবং তাদের সমবেদনা জানান।
একটি ছোট ভুল, একটি বড় ক্ষতি
এই দুর্ঘটনা শুধু একটি পারিবারিক দুঃখ নয়, বরং সমগ্র সমাজের জন্য একটি সতর্কবার্তা যে শিশুদের সরল কার্যকলাপ অনেক সময় জীবনের জন্য মারাত্মক হতে পারে। স্কুলের পোশাক, বিশেষ করে টাই বা বেল্টের মতো জিনিস শিশুদের খেলার সময় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। খেলার সময় শিশুদের এই ধরনের পোশাক খুলে রাখা উচিত অথবা অন্তত তাদের উপর নজর রাখা উচিত।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষকদের মতামত
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘটনা এড়াতে অভিভাবকদের শিশুদের পোশাকের বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। টাইয়ের মতো জিনিস শুধুমাত্র স্কুলে পরা বাধ্যতামূলক করা উচিত, বাড়িতে পরা বিপজ্জনক হতে পারে। একইভাবে, শিক্ষকরাও অভিভাবকদের শিশুদের কার্যকলাপের উপর নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রশাসনের আবেদন: সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন
স্থানীয় প্রশাসন ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে আবেদন করেছে যে বাড়িতে এমন হুক, খুঁটি বা অন্য কোনো জিনিস যা শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে, তা সরিয়ে ফেলা উচিত। এছাড়াও শিশুদের শেখানো জরুরি যে কীভাবে এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলাতে হয়।