ট্রাম্প টেক্সাসের বন্যা নিয়ে অভিনেত্রী रोजी ও’ডনেলকে “মানবতার জন্য বিপদ” বলে তাঁর মার্কিন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
আমেরিকা: টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা এবং সেই বিষয়ে সরকারি সংস্থাগুলির প্রতিক্রিয়া নিয়ে অভিনেত্রী रोजी ও’ডনেল ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেছিলেন। এর উত্তরে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে "মানবতার জন্য বিপদ" বলে অভিহিত করে তাঁর মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিল করার হুমকি দেন। যদিও মার্কিন আইন অনুযায়ী, এমনটা করা সম্ভব নয়। তাঁদের মধ্যে এই বিবাদ নতুন নয়, ২০০৬ সাল থেকে এটি চলে আসছে।
টেক্সাসের বন্যা এবং ও’ডনেলের মন্তব্য
অভিনেত্রী এবং টক শো হোস্ট रोजी ও’ডনেল জুলাই মাসের শুরুতে একটি TikTok ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন। এই ভিডিওতে তিনি টেক্সাসের ভয়াবহ বন্যা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে এখনো পর্যন্ত ১১৯ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
রোজি এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ট্রাম্প প্রশাসনের সেই নীতিগুলির সঙ্গে যুক্ত করেন, যার অধীনে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিষয়ক সরকারি সংস্থাগুলির তহবিল ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছিল।
তিনি তাঁর ভিডিওতে বলেছিলেন, "টেক্সাসে যা ঘটেছে, তা কেবল একটি দুর্ঘটনা ছিল না, বরং এটি এমন একটি ব্যবস্থার ব্যর্থতা ছিল যা সতর্ক করার জন্য এবং মানুষকে সময় থাকতে সুরক্ষিত করার জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। যখন সরকার এই সংস্থাগুলির ক্ষমতা খর্ব করে, তখন ফল মারাত্মক হতে পারে।"
ট্রাম্পের তীব্র প্রতিক্রিয়া
রোজির সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে ট্রাম্প শনিবার তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ একটি বিবৃতি দেন।
তিনি লেখেন, "যেহেতু रोजी ও’ডনেল আমাদের মহান দেশের স্বার্থে নেই, তাই আমি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি তাঁর নাগরিকত্ব ফিরিয়ে নেওয়া হোক। তিনি মানবতার জন্য বিপদ। যদি আয়ারল্যান্ড তাঁকে রাখতে চায়, তবে সেখানেই থাকুন। গড ব্লেস আমেরিকা।" এই তীব্র বিবৃতিতে আরও একবার ট্রাম্প এবং ও’ডনেলের মধ্যে পুরনো বিবাদ সামনে চলে আসে।
মার্কিন নাগরিকত্ব কি কেড়ে নেওয়া যেতে পারে?
মার্কিন আইন অনুযায়ী, জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া ব্যক্তির নাগরিকত্ব রাষ্ট্রপতির অধিকারের মধ্যে পড়ে না। रोजी ও’ডনেলের জন্ম নিউ ইয়র্কে হয়েছিল, এই কারণে তাঁর নাগরিকত্ব বাতিলের ট্রাম্পের এই মন্তব্য কেবল রাজনৈতিক এবং আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়া হিসেবেই দেখা যেতে পারে, যার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
রোজি ও’ডনেল বর্তমানে তাঁর ১২ বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছেন। তিনি আমেরিকা থেকে চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা বৈষম্য এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি হওয়া খারাপ ব্যবহারকে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, যতক্ষণ না আমেরিকা সকল নাগরিককে সমান অধিকার এবং নিরাপত্তা দেয়, ততক্ষণ তিনি দেশে ফেরার কথা ভাববেন না।
ট্রাম্পের নীতির উপর রোজির সরাসরি আক্রমণ
রোজি শুধু বন্যা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেননি, বরং স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন যে এটি সবই রাষ্ট্রপতির নীতির ফল। তিনি বলেন, "যখন একটি জাতির নেতারা বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সতর্কীকরণ ব্যবস্থা দুর্বল করেন, তখন ধ্বংস অনিবার্য হয়ে ওঠে।"
ট্রাম্প বনাম रोजी: পুরনো বিবাদ
ট্রাম্প এবং ও’ডনেলের মধ্যেকার বিবাদ নতুন নয়। এই বিতর্ক শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে, যখন ও’ডনেল একটি টেলিভিশন শো 'The View'-এ মিস ইউএসএ প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গে ট্রাম্পের আচরণ নিয়ে মজা করেছিলেন। সেই সময় ট্রাম্প এই প্রতিযোগিতার মালিক ছিলেন এবং তিনি এর প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিলেন। এরপর তাঁদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন জনসমক্ষে বহুবার তীব্র মন্তব্য বিনিময় হয়েছে।