মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প পারস্পরিক শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) আরোপের সময়সীমা ৯ জুলাই থেকে বাড়িয়ে ১ আগস্ট করেছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ সাময়িকভাবে স্বস্তি পেয়েছে, যেখানে কিছু দেশের উপর ভারী শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
ট্রাম্পের শুল্ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব বাণিজ্যকে প্রভাবিত করার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পারস্পরিক শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) আরোপের সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখন এই সময়সীমা ৯ জুলাই থেকে বাড়িয়ে ১ আগস্ট করা হয়েছে। এর সরাসরি সুবিধা হবে ভারতসহ সেই দেশগুলোর, যাদের সঙ্গে আমেরিকার এখনো বাণিজ্য চুক্তির প্রক্রিয়া চলছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট স্পষ্ট করেছেন যে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এই বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে (Executive Order) স্বাক্ষর করবেন, যাতে এই পরিবর্তনটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা যায়।
পারস্পরিক শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) কী?
পারস্পরিক শুল্কের অর্থ হল পারস্পরিক বাণিজ্য শুল্ক। অর্থাৎ, যদি কোনো দেশ আমেরিকার উপর কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য শুল্ক আরোপ করে, তবে আমেরিকাও সেই দেশ থেকে আসা একই পণ্যের উপর ততটাই কর আরোপ করবে। এই নীতি ট্রাম্প প্রশাসনের 'আমেরিকা ফার্স্ট' (America First) কৌশলের একটি অংশ।
ভারতের জন্য স্বস্তি, তবে চুক্তি এখনো মুলতবি
ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করেছে যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি (Trade Deal) খুব শীঘ্রই হতে পারে। তবে, এটি কবে এবং কোন শর্তে হবে, সে বিষয়ে আপাতত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
ট্রাম্প বলেছেন যে ভারতের সঙ্গে আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগিয়ে চলেছে এবং নিকট ভবিষ্যতে কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে, শুল্কের সময়সীমা বাড়ানো ভারতের জন্য একটি অস্থায়ী স্বস্তি।
এপ্রিল মাসে ঘোষণা করা হয়েছিল, তবে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ২ এপ্রিল ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশের উপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন। এর পরে বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আমেরিকা ৯০ দিনের ছাড় দিয়েছিল, যার মেয়াদ ৯ জুলাই শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন এই সময়সীমা আরও একবার ১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
১৪টি দেশের উপর শুল্ক বৃদ্ধি, কিছু ক্ষেত্রে ৪০% পর্যন্ত শুল্ক
যেখানে কিছু দেশকে স্বস্তি দেওয়া হয়েছে, সেখানে আমেরিকা ১৪টি দেশের উপর ভারী শুল্ক আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, জাপান, মায়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, কাজাখস্তান এবং তিউনিসিয়া।
শুল্কের হার
- মায়ানমার এবং লাওস: ৪০% শুল্ক
- থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া: ৩৬% শুল্ক
- বাংলাদেশ এবং সার্বিয়া: ৩৫% শুল্ক
- ইন্দোনেশিয়া: ৩২% শুল্ক
- দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা: ৩০% শুল্ক
- জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, কাজাখস্তান এবং তিউনিসিয়া: ২৫% শুল্ক
ব্রিটেন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্মতি
যেখানে অনেক দেশকে শুল্ক বৃদ্ধির সম্মুখীন হতে হয়েছে, সেখানে আমেরিকা ব্রিটেন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছে। এই চুক্তির পরে এই দুটি দেশকে শুল্ক থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে।