ট্রাম্পের শুল্ক নীতি: ভারতের জন্য সুযোগ, মনে করছেন আনন্দ মাহিন্দ্রা

ট্রাম্পের শুল্ক নীতি: ভারতের জন্য সুযোগ, মনে করছেন আনন্দ মাহিন্দ্রা

আনন্দ মাহিন্দ্রা ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে ভারতের জন্য সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি ব্যবসার পরিবেশ সহজ করার পাশাপাশি পর্যটন, বিনিয়োগ ও নির্মাণ খাতে উন্নতির পক্ষে কথা বলেছেন।

Trump Tariff India: মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে ভারতের জন্য একটি সোনালী সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে ভারত তার নীতি ও ব্যবসায়িক ব্যবস্থায় উন্নতি করে বিশ্ব বিনিয়োগের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

১৯৯১ সালের সংকটের মতো এটিও পরিবর্তনের সূচক হতে পারে

আনন্দ মাহিন্দ্রা এক্স (পূর্বে টুইটার) এ পোস্ট করে বলেছেন, ১৯৯১ সালের বৈদেশিক মুদ্রার সংকট যেভাবে ভারতে অর্থনৈতিক উদারীকরণের সূচনা করেছিল, তেমনই ট্রাম্পের শুল্ক নীতি থেকে উদ্ভূত বিশ্ব বাণিজ্য সংকট ভারতের জন্য একটি নতুন যুগের প্রবেশদ্বার হতে পারে। এই শুল্ক যুদ্ধ ভারতের জন্য 'অমৃত' প্রমাণ হতে পারে, যদি আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিই।

ভারতের উপর আমেরিকার শুল্কের আঘাত

সম্প্রতি আমেরিকা রাশিয়ার তেল আমদানির উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে, যা পরে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে ভারতের টেক্সটাইল, সামুদ্রিক ও চামড়া রফতানির মতো ক্ষেত্রগুলোতে বড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারত সরকার এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও অন্যায় বলে অভিহিত করেছে।

ব্যবসায়িক পরিবেশে বিপ্লবের প্রয়োজন

আনন্দ মাহিন্দ্রা দুটি প্রধান পরামর্শ দিয়েছেন। প্রথমত, ভারতকে তার ব্যবসায়িক পরিবেশকে সরল ও স্বচ্ছ করতে হবে। তিনি সিঙ্গেল-উইন্ডো ক্লিয়ারেন্স সিস্টেমের প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে বিনিয়োগ প্রস্তাবগুলি দ্রুত অনুমোদন পায়। তিনি বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয় করে একটি জাতীয় মঞ্চ তৈরি করা যেতে পারে, যা প্রক্রিয়াটিকে সহজ করবে এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে।

পরিবেশ ও পর্যটন থেকে আয় বাড়তে পারে

দ্বিতীয় পরামর্শটি পর্যটন ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত। আনন্দ মাহিন্দ্রা বলেছেন, ভারতের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করা উচিত। এছাড়াও, প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে উন্নত সুবিধা যুক্ত 'পর্যটন করিডোর' তৈরি করা উচিত। এতে পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা ও অবকাঠামোকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

বৈশ্বিক উদাহরণ থেকে শেখার প্রয়োজন

মাহিন্দ্রা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) এবং কানাডার উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে এই দেশগুলোও তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। EU তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েছে, যা আঞ্চলিক আত্মনির্ভরশীলতাকে জোরদার করেছে। অন্যদিকে, কানাডা তাদের প্রদেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাধা দূর করার দিকে পদক্ষেপ নিয়েছে।

ভারতকে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে

ভারতকে তার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণের সহজলভ্যতা, অবকাঠামোতে বিনিয়োগ এবং প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ (PLI) প্রকল্পের বিস্তার অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, ম্যানুফ্যাকচারিং ইনপুটগুলোর উপর আমদানি শুল্ক কমানোও জরুরি, যা ভারতের বিশ্ব প্রতিযোগিতায় উন্নতি ঘটাতে পারে।

Leave a comment