ডিজিপি রাজীব কৃষ্ণ উমর আনসারীর গ্রেফতারকে প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে হওয়া বলেছেন, ড্রোন, বন্যা ত্রাণ এবং অর্থনৈতিক অপরাধের ওপর পুলিশের সক্রিয়তার তথ্য দিয়েছেন।
UP: পুলিশ আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না। সোমবার এক প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ মহাপরিচালক (DGP) রাজীব কৃষ্ণ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় উমর আনসারীর গ্রেফতার, ড্রোন কার্যক্রম, বন্যা ত্রাণ কার্যাবলী এবং অর্থনৈতিক অপরাধ নিয়ে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকার বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পূর্ণরূপে আইনি প্রক্রিয়া এবং প্রমাণের ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশিকা সম্পূর্ণরূপে অনুসরণ করা হচ্ছে।
উমর আনসারীর গ্রেফতার: আইনি কাঠামোর মধ্যে করা পদক্ষেপ
রাজ্যে রাজনৈতিক চাঞ্চল্যের মধ্যে উমর আনসারীর গ্রেফতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ডিজিপি বলেন, 'এই গ্রেফতার সম্পূর্ণরূপে তথ্য ও প্রমাণের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানায় FIR দায়ের করার পরে তদন্ত করা হয়েছে এবং যখন পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে, তখনই গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশিকা এবং বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করা হয়েছে।' তিনি আরও জানান যে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্ট আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে এবং পুলিশ সেই অনুযায়ী কাজ করছে।
বন্যা ত্রাণ কার্যে রাজ্য পুলিশের সক্রিয়তা
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডিজিপি বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চলছে। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত:
- ১৭টি কোম্পানি বিশেষভাবে ত্রাণ কাজের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
- আরও ১৮টি কোম্পানি এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, স্থানীয় পুলিশ এবং পিএসি-র সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করছে।
- স্থানীয় প্রশাসনকে সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে যাতে বন্যা দুর্গত নাগরিকদের কাছে দ্রুত সাহায্য পৌঁছানো যায়।
রাজীব কৃষ্ণ বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হল একজন ব্যক্তিও যেন ত্রাণ থেকে বঞ্চিত না হন। পুলিশের প্রতিটি জওয়ান বন্যা কবলিত এলাকায় সম্পূর্ণ তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে।'
ড্রোন কার্যকলাপের ওপর কড়া নজরদারি
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় রাতের বেলা ড্রোন ওড়ার ঘটনা সামনে এসেছে, যা নিয়ে জনগণের মধ্যে ভয় ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়ে ডিজিপি বলেন: 'গত ২০ দিনে বিভিন্ন স্থানে ড্রোন কার্যক্রম দেখা গেছে। কিছু ঘটনা সত্যি ছিল, তবে অনেকগুলোই ছিল গুজব। পুলিশ এ পর্যন্ত ১৬টির বেশি মামলা দায়ের করেছে এবং গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
তিনি সাধারণ জনগণের কাছে আবেদন করেন যে গুজবে বিশ্বাস করবেন না এবং কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে অবিলম্বে পুলিশকে জানান।
অর্থনৈতিক অপরাধের ওপর ইওডব্লিউ-এর অ্যাকশন
রাজ্যে অর্থনৈতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অর্থনৈতিক অপরাধ শাখার (EOW) ভূমিকা ডিজিপি গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে:
- অনেক বড় অর্থনৈতিক অপরাধীকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে।
- জনগণকে সচেতন করার জন্য ৯টি অ্যানিমেশন ভিডিও এবং একটি বুকলেট প্রকাশ করা হয়েছে।
- আধিকারিকদের আরও দক্ষ করে তোলার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হচ্ছে।
- রাজীব কৃষ্ণ বলেন, 'ডিজিটাল প্রতারণা এবং বিনিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে মানুষকে সুরক্ষিত রাখা আমাদের অগ্রাধিকার।'
আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে কোনো আপস নয়
প্রেস বার্তার শেষে ডিজিপি স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে প্রদেশে শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার কোনো চেষ্টাকে বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন: 'যদি কোনো ব্যক্তি জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে NSA (জাতীয় সুরক্ষা আইন) এবং গ্যাংস্টার অ্যাক্টের মতো কঠোর আইনের অধীনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' রাজীব কৃষ্ণ স্পষ্ট করে বলেন যে বিষয়টি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক যাই হোক না কেন — পুলিশ নিরপেক্ষ, প্রমাণ-ভিত্তিক এবং আইনসম্মতভাবে পদক্ষেপ নেবে।