উত্তর প্রদেশে 'রোজগার মিশন'-এর সূচনা। সরকার এক বছরে এক লক্ষ যুবককে বেসরকারি খাতে চাকরি দেবে এবং ২৫ থেকে ৩০ হাজার যুবককে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে।
UP নিউজ: উত্তর প্রদেশের যোগী সরকার রাজ্যের যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন দ্বার খোলার উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্যাবিনেট বৈঠকে 'উত্তর প্রদেশ রোজগার মিশন'-এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই মিশনের উদ্দেশ্য হল এক বছরে এক লক্ষ যুবককে প্রাইভেট সেক্টরে চাকরি দেওয়া এবং ২৫ থেকে ৩০ হাজার যুবককে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। এর অধীনে, রাজ্য সরকার নিজেই রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স নেবে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
উত্তর প্রদেশ রোজগার মিশন-এর সবুজ সংকেত
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্যাবিনেট বৈঠকে 'উত্তর প্রদেশ রোজগার মিশন'-এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে, রাজ্য সরকার বেসরকারি খাতে এক লক্ষ যুবককে কর্মসংস্থান দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এছাড়াও, ২৫ থেকে ৩০ হাজার যুবককে বিদেশে চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী অনিল রাজভর জানিয়েছেন, এই মিশন রাজ্যের যুবকদের आत्मनिर्भर করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। সরকার এই মিশনের অধীনে নিজেই বিদেশে চাকরি দেওয়ার জন্য রিক্রুটিং এজেন্ট (Recruiting Agent - RA)-এর লাইসেন্স নেবে।
এবার সরকার বিদেশে চাকরি দেবে
এতদিন বিদেশে চাকরির জন্য যুবকদের বেসরকারি সংস্থাগুলির উপর নির্ভর করতে হত। কিন্তু এই নতুন প্রকল্পের অধীনে, রাজ্য সরকার নিজেই এই দায়িত্ব নেবে। সরকারের পরিকল্পনা হল, বিদেশে কর্মরত সংস্থাগুলির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সহজ ও স্বচ্ছ করা।
অনিল রাজভর জানিয়েছেন, বিদেশে উত্তর প্রদেশের যুবকদের, বিশেষ করে নার্সিং, প্যারামেডিক্যাল, ড্রাইভিং, গৃহস্থালী কাজ এবং দক্ষ শ্রমিক হিসাবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সরকার এখন এই ক্ষেত্রগুলিতে সরাসরি নিয়োগ করতে পারবে।
রোজগার মিশনের প্রধান বৈশিষ্ট্য
এই মিশনের অধীনে সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে, যা কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও কার্যকরী করবে। কিছু প্রধান বিষয়গুলি হল:
- দেশ ও বিদেশে কর্মসংস্থানের চাহিদার সমীক্ষা করা হবে।
- সংস্থাগুলির সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।
- দক্ষতার ঘাটতি চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালানো হবে।
- ভাষা এবং প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিং দেওয়া হবে।
- ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এবং ক্যাম্পাস প্লেসমেন্টের সুবিধা পাওয়া যাবে।
- নিয়োগের পর যুবকদের সহযোগিতা ও নজরদারিও প্রদান করা হবে।
প্রত্যেক হাতে কাজ, প্রত্যেক দক্ষতার সম্মান
শ্রম মন্ত্রী অনিল রাজভর বলেছেন, এই মিশন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সেই চিন্তাভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেবে, যেখানে তিনি প্রত্যেক যুবককে তাদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, 'প্রত্যেক হাতে কাজ, প্রত্যেক দক্ষতার সম্মান' এখন শুধু একটি শ্লোগান নয়, বরং একটি কর্মপরিকল্পনা হয়ে উঠেছে।
সরকারের ধারণা, যখন রাজ্যের যুবকরা দক্ষ এবং आत्मनिर्भर হবে, তখনই উত্তর প্রদেশ এক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়ার দিকে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে পারবে।
মহিলা শ্রমিকদের জন্য নতুন সুযোগ
ক্যাবিনেট বৈঠকে মহিলাদের স্বার্থে একটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন মহিলারা কিছু নির্দিষ্ট শর্তের সাথে ২৯টি বিপজ্জনক শিল্প শ্রেণিতেও কাজ করতে পারবে, যেখানে আগে তাদের অনুমতি ছিল না।
শ্রম মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রথমে ১২টি এবং সম্প্রতি ৪টি শ্রেণিতে মহিলাদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এখন এই ছাড়টি সব ২৯টি শ্রেণির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। এই পদক্ষেপ নারী ক্ষমতায়নকে একটি নতুন দিশা দেবে এবং তাদের আর্থিকভাবে আরও শক্তিশালী করবে।
নতুন গ্রিনফিল্ড এক্সপ্রেসওয়ের অনুমোদন
ক্যাবিনেট বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের অধীনে, আগ্রা-লখনউ এক্সপ্রেসওয়েকে পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য নতুন গ্রিনফিল্ড লিংক এক্সপ্রেসওয়েকেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই নতুন এক্সপ্রেসওয়ে প্রায় ৪৯.৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এবং ছয় লেনের হবে, যা ভবিষ্যতে আট লেন পর্যন্ত বিস্তৃত করা যেতে পারে। এই প্রকল্পের নির্মাণ EPC মডেলের ভিত্তিতে করা হবে, যেখানে রাজ্য সরকার প্রায় ₹4775 কোটি টাকা খরচ করবে।