উত্তরাখণ্ডে দেশের বৃহত্তম রোপওয়ে প্রকল্প অনুমোদিত: গোবিন্দঘাট থেকে হেমकुंड সাহেব পর্যন্ত ১২.৪ কিমি দীর্ঘ যাত্রা সহজ হবে

উত্তরাখণ্ডে দেশের বৃহত্তম রোপওয়ে প্রকল্প অনুমোদিত: গোবিন্দঘাট থেকে হেমकुंड সাহেব পর্যন্ত ১২.৪ কিমি দীর্ঘ যাত্রা সহজ হবে

উত্তরাখণ্ডে দেশের বৃহত্তম রোপওয়ে প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। গোবিন্দঘাট থেকে হেমकुंड সাহেব পর্যন্ত ১২.৪ কিলোমিটার রোপওয়ে তৈরি হবে। এটি তীর্থযাত্রীদের যাত্রা সহজ করবে এবং স্থানীয়দের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।

দেরাদুন: উত্তরাখণ্ডে ধর্মীয় পর্যটনের প্রসারের লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে দেশের বৃহত্তম রোপওয়ে প্রকল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এই রোপওয়ে গোবিন্দঘাট থেকে হেমकुंड সাহেব পর্যন্ত নির্মিত হবে। এই রোপওয়ের সাহায্যে তীর্থযাত্রীদের যাত্রা অত্যন্ত সহজ ও নিরাপদ হবে। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী বলেছেন যে এই প্রকল্পটি ধর্মীয় বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করবে এবং পর্যটন সম্পর্কিত ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ উন্মোচন করবে।

হেমकुंड সাহেবের গুরুত্ব

হেমकुंड সাহেব শিখ ধর্মের একটি অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,৩২৯ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এবং সেখানে পৌঁছানো সবসময়ই একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় ছিল। এখন পর্যন্ত পুণ্যার্থীদের রুক্ষ পথ এবং দীর্ঘ যাত্রার সম্মুখীন হতে হত। অনেক মানুষ স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে যাত্রা সম্পন্ন করতে পারতেন না। প্রস্তাবিত রোপওয়ে এই অসুবিধা দূর করবে এবং লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের জন্য এই যাত্রা সহজ ও সুগম করে তুলবে।

ব্যয় এবং প্রযুক্তিগত তথ্য

গোবিন্দঘাট থেকে হেমकुंड সাহেব পর্যন্ত প্রস্তাবিত এই রোপওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১২.৪ কিলোমিটার। এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ২,৭৩০.১৩ কোটি টাকা। এটিকে দেশের বৃহত্তম রোপওয়ে প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে এই প্রকল্পটি নিয়ে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে। নির্মাণ কাজ জাতীয় সড়ক লজিস্টিকস ও নির্মাণ লিমিটেড এবং রাজ্য সরকারের যৌথ সহযোগিতায় সম্পন্ন করা হবে। এর জন্য একটি বিশেষ উদ্দেশ্যমূলক যান (SPV) গঠন করা হয়েছে।

ধর্মীয় পর্যটনে আসবে গতি

মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ধর্মীয় পর্যটনের প্রসারের জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি কেবল পুণ্যার্থীদের যাত্রাই সহজ করবে না, বরং উত্তরাখণ্ডের স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যও নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করবে। পর্যটন বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসা, হোটেল শিল্প এবং পরিবহন ক্ষেত্র সরাসরি উপকৃত হবে।

পুণ্যার্থী ও সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা

গুরুদ্বার শ্রী হেমकुंड সাহেব ম্যানেজমেন্ট ট্রাস্টের সভাপতি এস নরিন্দর জিত সিং বিন্দ্রা এবং অন্যান্য শিখ সংগঠনগুলি মুখ্যমন্ত্রী ধামীর সাথে সাক্ষাৎ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বিন্দ্রা বলেছেন যে এই রোপওয়ে পুণ্যার্থীদের দীর্ঘদিনের অসুবিধা দূর করবে। এখন মানুষ নিরাপদ ও আরামদায়ক যাত্রা করতে পারবে। এছাড়াও এটি স্থানীয়দের জন্য কর্মসংস্থান ও সামাজিক সমৃদ্ধির মাধ্যম হবে।

পরিবেশগত মানদণ্ডের প্রতি মনোযোগ

প্রকল্প সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে নির্মাণ কাজের সময় পরিবেশগত মানদণ্ডগুলির প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া হবে। উত্তরাখণ্ড একটি সংবেদনশীল পরিবেশগত অঞ্চল, যেখানে উন্নয়ন কাজ করার সময় প্রকৃতি এবং স্থানীয় জনমতের প্রতি সম্মান জানানো অপরিহার্য। মুখ্যমন্ত্রী ধামী স্পষ্ট করেছেন যে এই প্রকল্পটি এমনভাবে বাস্তবায়ন করা হবে যাতে পরিবেশের কোনও ক্ষতি না হয়।

Leave a comment