‘সার’ অভিযান ঘিরে চিঠি নির্বাচন কমিশনের রাজ্যে শুরু ভোটার তালিকা সংশোধনের তোড়জোড় !

‘সার’ অভিযান ঘিরে চিঠি নির্বাচন কমিশনের রাজ্যে শুরু ভোটার তালিকা সংশোধনের তোড়জোড় !

সার–এর ঢেউ এ বার বাংলায়, কমিশনের চিঠি ঘিরে নবান্নে নড়াচড়া

‘সার’—অর্থাৎ Special Intensive Revision, ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনের প্রক্রিয়া। বিহারের পর এই উদ্যোগ এবার সারা দেশজুড়ে, এবং তারই অঙ্গ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কড়া চিঠি। যদিও এই অভিযান কবে থেকে শুরু হবে, সে নিয়ে এখনই কিছু বলছে না কমিশন। তবে প্রস্তুতি শুরু করতে রাজ্যকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে—‘প্রস্তুত থাকুন, অপেক্ষা শুধু শুরুর তারিখের।’

চিঠিতে স্পষ্ট নির্দেশ—বুথ লেভেল অফিসার (BLO) এবং BLO সুপারভাইজারদের নিয়োগ অবিলম্বে

সম্পূর্ণ করতে হবে। শুধু নিয়োগ নয়, প্রত্যেক BLO ও সুপারভাইজারের কার্যক্ষমতা, দৃষ্টিভঙ্গি, এবং দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা যাচাই করতেও হবে। রাজনৈতিক দলগুলিকে আগে থেকেই বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA)দের তালিকা প্রস্তুত রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।এছাড়া, BLO ও BLAদের সমন্বয়ে কাজ করতেই হবে—এই কথাও চিঠিতে বারবার উল্লেখ।

মমতার কড়া বার্তা: ‘সাধারণ ভোটারের নাম যেন বাদ না যায়’

চিঠি পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন,BLO-রা দিল্লিতে প্রশিক্ষণে গেলেও আমাকে জানানো হয়নি! সকলের মানসিকতা এক নয়। নজর রাখতে হবে, যেন সাধারণ ভোটারের নাম বাদ না পড়ে।তাঁর সাফ বার্তা—ভুয়ো বা মৃত ভোটারের নাম বাদ যাক, কিন্তু প্রকৃত ভোটার বঞ্চিত হবেন না।

TMC বনাম বিজেপি  ভোটার তালিকায় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তীব্র তরজা

‘সার’ নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।তৃণমূলের জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন,BJP শুধু BLO-র নাম করে চেঁচাচ্ছে। অথচ নিয়ম বলছে BLO-কে BLA-র সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। প্রতিটি বুথেই আমাদের প্রতিনিধি রয়েছে।অন্যদিকে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বললেন,কমিশনের এই নির্দেশ নতুন কিছু নয়। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে এটাই নিয়ম। কে কাকে দয়া করছে, সেটা বড় কথা নয়।

‘সার’ মানে কি নাম বাদ যাওয়ার উৎসব? শুভেন্দুর তীব্র হুঁশিয়ারি

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন,সার’ তো নতুন কিছু নয়। ২০০৪ সালে ভোটার তালিকা সংশোধনে ২৬ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছিল। এবারও চার ধরনের নাম বাদ যাবে—মৃত, ডাবল এন্ট্রি, অস্তিত্বহীন ও অনুপ্রবেশকারী। রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের নাম থাকবে না।তিনি আশ্বস্ত করেন—ভারতীয় নাগরিক, হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান—কেউ ভয় পাবেন না।

রাজ্য জুড়ে ৮০,৬৮১ বুথ, বাড়বে সংখ্যা, BLO নিয়ে প্রশাসনিক টানাটানি

কমিশন জানিয়েছে, সর্বোচ্চ ১২০০ ভোটার পিছু এক বুথ করতে হবে। ফলে বুথ সংখ্যা বাড়বে অন্তত ১৪ হাজার। প্রতি ১০টি বুথে লাগবে একজন সুপারভাইজার। BLO হিসেবে ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার নাম ইআরওনেট পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে।তবে সমস্যা অন্য জায়গায়—অনেক সরকারি কর্মচারী এখন BLO-র দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে তদ্বির শুরু করে দিয়েছেন। জেলাশাসকদের কড়া নির্দেশ—কমিশনের অনুমতি ছাড়া কাউকে অব্যাহতি দেওয়া যাবে না।

রাজ্যের বাইরের ভোটারদের জন্য বিশেষ গুগল ফর্ম

কমিশন জানিয়েছে, যাঁরা রাজ্যের বাইরে থাকেন, তাঁরা চাইলে ই-মেল বা ডাকযোগেও তাঁদের ভোটার সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে পারেন। এর জন্য তৈরি হয়েছে পৃথক Google Data Sheet, যাতে অনলাইনে পূরণ করে জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট বিবরণ।

Leave a comment