উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে একটি আকর্ষণীয় মুহূর্ত দেখা গেল, যখন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবকে তাঁর ৬০তম জন্মদিনে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ শুভেচ্ছা জানালেন। যোগী তাঁর পোস্টে লেখেন, উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অখিলেশ যাদবকে জন্মদিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা! এই শুভেচ্ছাবার্তার উত্তরে অখিলেশও বিনম্রভাবে জবাব দেন, আপনার শুভেচ্ছার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু শালীন কথোপকথন উভয় পক্ষের সমর্থক এবং রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
দুই নেতার সম্পর্ক সবসময়ই তিক্ত ছিল
মুখ্যমন্ত্রী যোগী এবং অখিলেশ যাদবের সম্পর্কের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সবসময়ই সংঘাতপূর্ণ ছিল। দুই নেতার আদর্শ একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন—যেখানে যোগী আদিত্যনাথ হিন্দুত্ব এবং আইন-শৃঙ্খলার ওপর জোর দেন, সেখানে অখিলেশ যাদব সামাজিক ন্যায়বিচার এবং পিডিএ (পশ্চাৎপদ, দলিত ও সংখ্যালঘু) -এর রাজনীতিকে অগ্রাধিকার দেন। ২০১৭ সালে যোগীর ক্ষমতায় আসার পর থেকে দু'জনের মধ্যে বাদানুবাদ ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ বেড়ে যায়। অখিলেশ প্রায়ই স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে যোগী সরকারকে আক্রমণ করেছেন, যেখানে যোগী সমাজবাদী পার্টির শাসনকে 'দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের' প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আগেও এমন সৌহার্দ্য দেখা গেছে
যদিও রাজনৈতিক মতভেদ গভীর, বিশেষ অনুষ্ঠানে দুই নেতা পারস্পরিক সৌজন্য বজায় রাখতে পিছপা হন না। ২০২১ সালেও যোগী অখিলেশকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন এবং সেই বছর অখিলেশও মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদিও মঞ্চে কড়া মন্তব্য করা হয়, তবে এমন মুহূর্তগুলো নেতাদের ব্যক্তিগত সৌজন্য দেখানোর সুযোগ দেয়, যা জনগণের মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠায়। এই সৌজন্যবোধ রাজনীতিতে সম্মান বজায় রাখারও একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী এবং অখিলেশ যাদবের মধ্যে জন্মদিনের এই সংক্ষিপ্ত কথোপকথন প্রতীকী হলেও, উত্তর প্রদেশের উত্তপ্ত রাজনীতিতে একে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ বিরতি বলা যেতে পারে। দুই নেতার তরফ থেকে আসা এই আনুষ্ঠানিক সৌজন্য শুধু রাজনৈতিক ভাষার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না, বরং জনসাধারণকে এই আশ্বাসও দেয় যে আদর্শ ভিন্ন হলেও, সংলাপ এবং সম্মান এখনও রাজনীতির অংশ।