আকাশে মরণফাঁদ আহমেদাবাদ দুর্ঘটনায় ভয়ঙ্কর তথ্য ফাঁস করল তদন্ত রিপোর্ট

আকাশে মরণফাঁদ আহমেদাবাদ দুর্ঘটনায় ভয়ঙ্কর তথ্য ফাঁস করল তদন্ত রিপোর্ট
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

টেক-অফের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয় এয়ার ইন্ডিয়া ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এল এমন সব তথ্য, যা শিউরে তুলছে বিমান চলাচল দপ্তরকেও। মেঘানীনগরের দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২৬০ জনের, এখনও গুনছে শোকস্তব্ধ পরিবার।

একসঙ্গে দুই ইঞ্জিন বন্ধ! 'RUN' থেকে 'CUTOFF' কীভাবে?

প্রতিবেদনে চমকপ্রদ তথ্য—দুটি ইঞ্জিনের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ হঠাৎ করেই 'RUN' থেকে চলে যায় 'CUTOFF'-এ। এতেই মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় ইঞ্জিন সাপ্লাই, ভেঙে পড়ে বিমান। প্রশ্ন উঠছে—এই সিস্টেমিক ফেইলিওর কি কেবল যান্ত্রিক?

পাইলটের হতবাক প্রতিক্রিয়া ধরা পড়েছে ব্ল্যাকবক্সে

ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে শোনা যায়—একজন পাইলট বলেন, “তুমি ইঞ্জিন বন্ধ করেছ?” অপর পাইলটের জবাব, “আমি করিনি।” অর্থাৎ ইঞ্জিন বন্ধ হয়েছে বাইরে থেকে নয়, হয়ত কোনও সফটওয়্যার বা কন্ট্রোল গ্লিচের কারণে।

জীবন থেমে যায় মাত্র ৩০ সেকেন্ডে, থ্রাস্ট লিভার ছিল ঠিকঠাক

UTC সময় অনুযায়ী 08:08:42-এ বিমানটি তোলে সর্বোচ্চ গতি—১৮০ নট। আর ঠিক তার পরের সেকেন্ডেই দু’টি ইঞ্জিনের জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ OFF হয়ে যায়। থ্রাস্ট লিভার তখনও সক্রিয় ছিল বলে জানায় ব্ল্যাকবক্স। এতেই স্পষ্ট, বিপর্যয় ছিল প্রযুক্তিগত।

ষড়যন্ত্র নয়, প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ই দায়ী—স্পষ্ট তদন্ত রিপোর্ট

শুরুতে যাত্রীদের মধ্যে চাউর হয়েছিল নাশকতার গুজব। কিন্তু AAIB স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে—এটা ষড়যন্ত্র নয়, ইঞ্জিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ত্রুটিই এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী।

২৬০ জনের প্রাণহানি, শোকের ছায়া গোটা দেশে

বিমানটিতে ২৪১ জন যাত্রী এবং ১৯ জন ক্রু ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেবল একজন বেঁচে ফিরেছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে বেরিয়ে আসে ছিন্নভিন্ন দেহ, কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। আহমেদাবাদের মেঘানীনগর যেন এক মৃত্যুপুরী।

দুই ইঞ্জিন একযোগে বন্ধ হওয়া 'অস্বাভাবিক'—বিশেষজ্ঞদের অভিমত

এয়ারক্রাফ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত শক্তিশালী লকিং মেকানিজম থাকা সত্ত্বেও একসঙ্গে দু'টি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। হয় হিউম্যান এরর, না হলে সফটওয়্যার ম্যালফাংশন।

বিমানটি যাচ্ছিল লন্ডনের দিকে, প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে মাটিতে নামার আগেই মৃত্যু

ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ মডেলটি উড়েছিল আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেই উড়াল শুরু হওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই আকাশে ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুর ছায়া।

এয়ার ইন্ডিয়ার প্রতিক্রিয়া—“শোকস্তব্ধ, পরিবারগুলোর পাশে আছি”

এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাশে সর্বতোভাবে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। তদন্ত চলাকালীন আমরা কোনও প্রযুক্তিগত মন্তব্য করব না।

এখনই শেষ নয়, আরও বিস্ফোরক তথ্য আসতে পারে চূড়ান্ত রিপোর্টে

AAIB জানিয়েছে, এই রিপোর্টটি প্রাথমিক। ব্ল্যাকবক্স, ককপিট রেকর্ডিং এবং অন্যান্য সিস্টেম অ্যানালিসিস থেকে এখনও তথ্য আসছে। চূড়ান্ত রিপোর্টে আরও বিস্ফোরক দিক উঠে আসতে পারে বলে আশঙ্কা তদন্তকারীদের।

পরিশেষে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ:

জ্বালানি কন্ট্রোল সুইচ নিজে থেকে পরিবর্তন হওয়া এককথায় বিপজ্জনক।

RAT সক্রিয় হওয়া মানেই বিমান সম্পূর্ণ পাওয়ার হারিয়েছে।

সিস্টেম লক থাকা সত্ত্বেও একইসঙ্গে ইঞ্জিন বন্ধ—চাঞ্চল্যকর ইঙ্গিত।

বিমান নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এই দুর্ঘটনা।

ইঞ্জিন সিস্টেম সফটওয়্যারকে আরও শক্তিশালী ও নিরাপদ করার দাবি উঠছে।

ফ্লাইট ট্রেনিং ও সিমুলেশনেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা।

 

Leave a comment