অনিরুদ্ধাচার্য মহারাজ লিভ-ইন সম্পর্ক নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তাঁর কথাগুলোকে অনেকেই মহিলাদের স্বাধীনতা এবং আধুনিক চিন্তাভাবনার বিরোধী বলে মনে করছেন।
Aniruddhacharya Controversy: সম্প্রতি কথাবাচক অনিরুদ্ধাচার্য মহারাজের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা মহিলাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। ভিডিওটিতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ছেলেরা ২৫ বছরের মেয়েদের আনে, যারা ৪-৫ জায়গায় মুখ মেরে আসে।
তাঁর এই মন্তব্যের জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এই বিতর্কে এবার মুখ খুলেছেন বলিউড অভিনেত্রী দিশা পাটানির বোন এবং প্রাক্তন সেনা আধিকারিক খুশি পাটানি। তিনি শুধু মহারাজের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেননি, বরং তাঁকে রাষ্ট্রবিরোধী এবং নারী বিদ্বেষী বলেও অভিহিত করেছেন।
খুশি পাটানির ক্ষোভ
প্রাক্তন মেজর এবং ফিটনেস কোচ খুশি পাটানি ইনস্টাগ্রাম স্টোরি এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে অনিরুদ্ধাচার্যের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন: যদি এই লোকটা আমার সামনে থাকত, তাহলে আমি ওকে বুঝিয়ে দিতাম যে ‘মুখ মারা’ কী জিনিস। এ হল রাষ্ট্র-বিরোধী। এই ধরনের নিম্ন শ্রেণির বদমাশদের সমর্থন করা বন্ধ করুন। সমাজের সমস্ত কাপুরুষ এবং বোকা এদের অনুসরণ করছে। খুশি এই ধরনের মন্তব্যকে নারী বিরোধী এবং সমাজকে বিভক্তকারী বলে উল্লেখ করেছেন।
খুশি পাটানি তাঁর বিবৃতিতে এও প্রশ্ন তুলেছেন যে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা ছেলেদের নিয়ে কেন কোনো মন্তব্য করা হয়নি? তিনি বলেন, এটা দ্বিচারিতা, যা সমাজে মহিলাদের হেয় করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। লিভ-ইন সম্পর্কে তো দু'জন পার্টনারই থাকে, তাহলে শুধু মহিলাদের দোষ দেওয়া হয় কেন? পুরুষরা কি দোষমুক্ত? তিনি আরও বলেন যে আজকের যুবসমাজ নিজের পছন্দ মতো জীবন কাটাতে চায় এবং এই ধরনের পিতৃতান্ত্রিক ধারণা আর চলবে না।
কে এই খুশি পাটানি?
খুশি পাটানি, বলিউড অভিনেত্রী দিশা পাটানির দিদি। উত্তর প্রদেশের বেরেলীর বাসিন্দা খুশি, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ১১ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন এবং ২০২৪ সালে মেজর পদে থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি স্বাস্থ্য, সুস্থতা এবং আধ্যাত্মিকতার ক্ষেত্রে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি একজন যোগ প্রশিক্ষক, পুষ্টিবিদ, মেডিটেশন ইন্সট্রাক্টর এবং স্পিরিচুয়াল হিলার হিসেবে সক্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর একটি শক্তিশালী ফ্যান ফলোইং রয়েছে, যেখানে তিনি ফিটনেস এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা তৈরি করেন।
খুশি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে আধ্যাত্মিক মঞ্চগুলিকে ঘৃণা এবং লিঙ্গবৈষম্য ছড়ানোর জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। তিনি আরও যোগ করেছেন যে এই ধরনের কথাবাচকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে সমাজে মহিলাদের প্রতি বাড়তে থাকা ঘৃণা বন্ধ করা যায়। আজ যখন মহিলারা প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন, তখন তাঁদের এই ধরনের ছোট চিন্তাভাবনা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।