আসানসোলের নিয়ামতপুরে শিহরণ জাগানো শুটআউট। দিনের আলোয় প্রকাশ্যে ঝরে গেল এক পুরকর্মীর প্রাণ। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে খুনের ভয়ঙ্কর মুহূর্ত। জমি নিয়ে বিবাদের জেরে রক্তাক্ত হল আসানসোলের কুলটি থানার রহমান নগর।
জমি নিয়ে বিবাদেই রক্তের বন্যা
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত পুরকর্মীর নাম জাভেদ বারিক। পেশায় তিনি পুরসভার কর্মী হলেও ব্যক্তিগত জীবনে জড়িয়ে পড়েছিলেন এক জমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্বে। বহুদিন ধরেই ওই এলাকার জমি নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছিল। শুক্রবার রাতে সেই দ্বন্দ্বই যেন রূপ নিল রক্তগঙ্গায়।
সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ল ভয়াবহ দৃশ্য
ঘটনাস্থলের পাশেই ছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। মুহূর্তে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন জাভেদ বারিক। আতঙ্কে চারিদিকে মানুষ ছুটতে শুরু করেন। এলাকার সাধারণ মানুষ ফুটেজ দেখেই স্তব্ধ।
আতঙ্কে এলাকা, তদন্তে নেমেছে পুলিশ
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুলটি থানার পুলিশ। জাভেদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
রাজনৈতিক রং লাগছে ঘটনায়
স্থানীয় সূত্রে দাবি, জমি ব্যবসাকে ঘিরেই এই খুন। তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েনও নেপথ্যে থাকতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ জাভেদ বারিক পুরসভার কর্মী ছিলেন এবং স্থানীয় স্তরে তাঁর যথেষ্ট পরিচিতি ছিল। ফলে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিশানায় তিনি ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শুটআউটের জেরে আতঙ্ক ছড়াল নিয়ামতপুরে
দিনদুপুরে এভাবে শুটআউট হওয়ায় রীতিমতো শিহরিত এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, এলাকায় ক্রমশ দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। সাধারণ মানুষ ভয়ে বাইরে বেরোতে পারছেন না। অনেকেই পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি তুলেছেন।
পুলিশের কড়া নজরদারি শুরু
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনায় বিশেষ টিম গঠন করেছে। কারা এই খুনের পিছনে রয়েছে, সেই দিকেই এখন নজর। প্রাথমিকভাবে জমি ব্যবসায়ী ও তার সহযোগীদের সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে তদন্ত এগোলে বেরিয়ে আসবে আসল সত্য।
পরিবারে কান্নার রোল
পুরকর্মীর এই করুণ মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে পরিবার। শোকে স্তব্ধ স্ত্রী ও সন্তানরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন যদি আগেই ব্যবস্থা নিত, তাহলে হয়তো জাভেদের প্রাণ যেত না।
বড় চ্যালেঞ্জ পুলিশের সামনে
দিনের আলোয় এভাবে পুরকর্মীকে খুন করা নিঃসন্দেহে পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে স্থানীয়রা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, খুব শিগগিরই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।
শেষকথা
আসানসোলের নিয়ামতপুরের রক্তাক্ত শুটআউট শুধু একটি খুনের ঘটনা নয়, বরং প্রশ্ন তুলেছে নিরাপত্তা নিয়ে। জমি ব্যবসা ও অপরাধীদের প্রভাব বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনই অরক্ষিত হয়ে পড়বে—এমন আশঙ্কাই এখন ছড়াচ্ছে জেলাজুড়ে।