দিল্লি পুস্তক মেলায় মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বলেছেন যে মোবাইল এবং ই-গ্যাজেটের যুগেও বইয়ের গুরুত্ব বজায় রয়েছে। তিনি বইয়ের প্রতি ভালবাসা এবং ভাষাগত ঐক্যকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
Delhi Book Fair 2025: দিল্লিতে ২৯তম পুস্তক মেলা এইবার বিশেষভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারত মণ্ডপমের হল নম্বর ১২ এবং ১২এ-তে এই আয়োজন করা হয়েছে এবং এর মূল বিষয় হল "পুস্তক এবং প্রকাশনা: বহুভাষী ভারতের ভবিষ্যৎ"। মেলার উদ্বোধন করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি ডিজিটাল যুগে বইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বলেন যে ই-গ্যাজেট কখনওই বইয়ের বিকল্প হতে পারে না।
মোবাইলের যুগেও বইয়ের গুরুত্ব
মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বলেছেন যে মোবাইল এবং ডিজিটাল ডিভাইসের এই যুগেও বই পড়ার আনন্দ অন্যরকম। তিনি বলেন যে আজকের প্রজন্মকেও এই ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত রাখা দরকার।
রেখা গুপ্তা, যিনি পূর্বে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন, জানান যে তিনি প্রেমচাঁদের মতো মহান সাহিত্যিকদের রচনা ছাত্রজীবন থেকেই পড়ে আসছেন। তিনি মনে করেন যে বই কেবল জ্ঞানের উৎস নয়, সংবেদনশীলতা, সংস্কৃতি এবং ধারণাকেও বিকাশ করে।
লেখক ও সাহিত্যিকদের স্মরণ
মুখ্যমন্ত্রী দেশের সেই সব লেখক ও সাহিত্যিকদেরও স্মরণ করেছেন যাঁরা ভারতীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন, দিল্লি পুস্তক মেলা সেই সকল সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য একটি সোনালী সুযোগ যারা বইয়ের সঙ্গে নিজেদের সংযোগ বজায় রাখতে চান।
স্টল পরিদর্শন ও সাংস্কৃতিক ঝলক
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা পুস্তক মেলায় স্থাপিত বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে দিল্লির শিল্প, সংস্কৃতি ও ভাষা মন্ত্রী কপিল মিশ্রও উপস্থিত ছিলেন। দুই নেতাই প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পাঠকদের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে আলোচনা করেন।
দেশভক্তি ও ভাষাগত ঐক্যের ঝলক
এইবারের দিল্লি পুস্তক মেলা শুধু বইয়ের মেলা নয়, এটি দেশভক্তি ও ভাষাগত ঐক্যের প্রতীকও হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে মেলায় "হর ঘর তিরঙ্গা" অভিযানও প্রদর্শিত হয়েছে। এর অধীনে একটি সেলফি পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে, যেখানে দর্শকরা হাতে তেরঙ্গা নিয়ে ছবি তুলতে পারেন।
সরকারি অ্যাকাডেমির অংশগ্রহণ
এই বছর প্রথমবারের মতো দিল্লি সরকারের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অ্যাকাডেমিও পুস্তক মেলায় অংশ নিয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে बढ़ावा দেওয়া এবং সাহিত্যকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
১০০টিরও বেশি প্রকাশকের অংশগ্রহণ
এই পুস্তক মেলায় ১০০টিরও বেশি প্রকাশক অংশ নিচ্ছেন। ভারতীয় বাণিজ্য উন্নয়ন সংস্থা (ITPO) এবং ভারতীয় প্রকাশক সংঘ (FIP) যৌথভাবে এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় বিভিন্ন ভাষার বইয়ের সম্ভার উপলব্ধ রয়েছে।
solely প্রকাশকদের উপর মনোযোগ
FIP-এর কর্মকর্তাদের মতে, পূর্বের বছরগুলোতে অভিযোগ ছিল যে মেলায় বই বিক্রেতাদের সংখ্যা প্রকাশকদের চেয়ে বেশি ছিল। এইবার এই সমস্যা সমাধান করে হল নম্বর ১২ শুধুমাত্র প্রকাশকদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। হল নম্বর ১২এ-তে অন্যান্য স্টল স্থাপন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণ
ছাত্রদের মেলায় যোগদানের জন্য দিল্লি সরকার স্কুল ও কলেজগুলিতে বিশেষ আমন্ত্রণ পাঠিয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, বক্তৃতা এবং সাহিত্যিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান
শুক্রবারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ মালহোত্র মেলায় যোগ দেবেন এবং ১৫ জন লেখক-সাহিত্যিককে সম্মানিত করবেন। এছাড়াও, রবিবার সমাপনী অনুষ্ঠানে দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী আশীষ সুদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
প্রবেশ বিনামূল্যে
পুস্তক মেলায় সাধারণ জনগণের জন্য প্রবেশ বিনামূল্যে রাখা হয়েছে। আয়োজকদের উদ্দেশ্য হল বেশি সংখ্যক মানুষ সাহিত্য ও বইয়ের এই মহাকুম্ভে অংশ নিক এবং তাদের ভাষাগত সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের সংযোগ অনুভব করুক।
পাঠকদের জন্য সুযোগ
পুস্তক মেলায় বইয়ের প্রকাশ, সাহিত্য আলোচনা, লেখকদের সঙ্গে সংলাপ, স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রধান আকর্ষণ থাকবে। এই মেলা শুধু বই বিক্রি ও প্রদর্শনের মঞ্চ নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক মিলনস্থলও।