ঢাকা, বাংলাদেশে একটি প্রশিক্ষণ জেট একটি স্কুল ভবনে বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনায় একজন নিহত এবং ১০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী শোক প্রকাশ করেছেন এবং সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
ঢাকা বিমান দুর্ঘটনা: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় একটি মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা পুরো অঞ্চলকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ১০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে যখন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিধ্বস্ত হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিবৃতি
প্রধানমন্ত্রী মোদী সামাজিক মাধ্যম X-এ একটি পোস্টে লিখেছেন, "ঢাকাতে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও আহতের ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী। আমরা এই দুঃখের সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে আছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। ভারত সম্ভাব্য সকল সহায়তা দিতে প্রস্তুত।"
কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল: বিস্তারিত জানুন
সোমবার এই দুর্ঘটনাটি ঘটে, যখন চীনা তৈরি এফ-৭ প্রশিক্ষণ বিমানটি একটি নিয়মিত অনুশীলনের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরা এলাকায় অবস্থিত স্কুল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। সংঘর্ষটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে ঘটনাস্থলেই একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার সময় স্কুলে ক্লাস চলছিল, যার কারণে শিশু ও শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে কালো ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী আকাশে উঠতে দেখা যায়। ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে।
প্রশাসন ও বিমান বাহিনীর প্রতিক্রিয়া
নিহতদের পরিচয় এবং আহতদের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও বাংলাদেশ প্রশাসন জানায়নি। তবে এটা স্পষ্ট যে দুর্ঘটনায় আহতদের অধিকাংশই ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও কর্মচারী।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, সরকার এই দুর্ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে। তিনি আরও বলেন, "এই দুর্ঘটনায় বিমান বাহিনী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা যে ক্ষতি স্বীকার করেছেন, তা অপূরণীয়। এটি পুরো দেশের জন্য গভীর শোকের সময়।"
এফ-৭ বিমানটি কী?
এফ-৭ বিমান একটি চীনা তৈরি সুপারসনিক প্রশিক্ষণ জেট, যা অনেক দেশের বিমান বাহিনী অনুশীলনের জন্য ব্যবহার করে। এটি পুরনো মিগ-২১ মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং এর গতি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সীমিত। অতীতে এই বিমানগুলোর প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা গেছে, যা তাদের নিরাপত্তা মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
দুর্ঘটনার পেছনে কি প্রযুক্তিগত ত্রুটি নাকি অবহেলা?
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ধারণা করা হচ্ছে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। বিমান বাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল তদন্ত করছে এবং শীঘ্রই একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এফ-৭ এর মতো পুরনো বিমানগুলোর নিয়মিত পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ অপরিহার্য। যদি আগে এই উদ্যোগ নেওয়া হতো, তাহলে হয়তো এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।