Traditional Durga Puja: অণ্ডালের মদনপুরে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজো প্রায় ২১৭ বছর ধরে চলে আসছে। জমিদার মহেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শুরু করা এই প্রথা আজও সংরক্ষিত। পুজোর অনুষ্ঠান শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই রীতিতে সম্পন্ন হয়। বিদেশে থাকা পরিবারের সদস্যরাও মূল ভিটেবাড়িতে এসে অংশগ্রহণ করেন। পারিবারিক পুজো হলেও গ্রামের মানুষও এতে আনন্দের সঙ্গে যুক্ত হন, যা এলাকার ঐতিহ্য ও সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।

প্রাচীন জমিদার পরিবার ও পুজোর ইতিহাস
মহেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রায় ২১৭ বছর আগে অণ্ডালের মদনপুরে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিশাল জমিদার, যার মালিকানায় বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং বর্ধমান জেলায় প্রচুর মৌজা অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূল কার্যালয় ছিল বিহারের মুজফ্ফরপুরে। পরিবারের সহায়তায় পুজো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।

গ্রামের অংশগ্রহণ ও ঐতিহ্য
বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা, যাদের আগে ‘কোটাল’ বলা হতো, পুজোর শুরুতেই মদনপুরে মায়ের মন্দিরে আসেন। তারা দায়িত্ব নিয়ে পুজোর প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই প্রথা মেনে চলে, যা স্থানীয় ঐতিহ্য ও সামাজিক সংহতির প্রতীক।

বিদেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণ
চট্টোপাধ্যায় পরিবারের যারা কর্মসূত্রে বিদেশে থাকেন, তাঁরা পুজোর চর দিনে ভিটেবাড়িতে এসে অংশগ্রহণ করেন। মন্দির প্রাঙ্গণে দু’বেলা মায়ের ভোগ অনুষ্ঠিত হয়। পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি এই পুজোকে আরও উৎসবমুখর এবং গ্রামবাসীর জন্য আনন্দের উৎসে পরিণত করে।
পুজোর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
পারিবারিক পুজো হলেও সমগ্র গ্রামবাসী এতে আনন্দের সঙ্গে যুক্ত হন। এই প্রথা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং গ্রামের সামাজিক বন্ধন ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। গ্রাম ও পরিবার মিলিত হয়ে এই উৎসবকে জীবন্ত রাখে।

অণ্ডালের মদনপুরের জমিদারবাড়ির প্রাচীন দুর্গাপুজো ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিবারের পরম্পরা ও গ্রামের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। বিদেশে থাকা সদস্যদেরও অংশগ্রহণ এই উৎসবকে আরও বিশেষ করেছে।













