জমা জলের প্রতিবাদে পথ অবরোধ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে উত্তপ্ত যশোর রোড

জমা জলের প্রতিবাদে পথ অবরোধ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে উত্তপ্ত যশোর রোড

ভাসছে এলাকা, ক্ষুব্ধ জনতা

হাবড়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে দিনের পর দিন জমে থাকা জলে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন বাসিন্দারা। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, সকালে জমা জল অপসারণ করে দেওয়া হবে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না হওয়ায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, জলমগ্ন অবস্থায় বাসিন্দাদের অসহনীয় জীবনযাপন নিয়েও উদাসীন প্রশাসন।

যশোর রোডে অবরোধে নেমে বিক্ষোভ

শনিবার দুপুরে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা হঠাৎ যশোর রোড অবরোধ করে দেন। ব্যস্ত ওই জাতীয় সড়কে দ্রুত যান চলাচল থেমে যায়। স্কুলগামী পড়ুয়া থেকে অফিসযাত্রী—সবাই এই অবরোধের জেরে সমস্যায় পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জলনিকাশি ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। দিনে দিনে জল বেড়েই চলেছে, তবু পুরসভার কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না।

অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় হাবড়া থানার পুলিশবাহিনী। অবরোধকারীদের রাস্তা ছাড়ার অনুরোধ করে পুলিশ। কিন্তু তাতে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। উভয়পক্ষের হাতাহাতিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। যানজট আরও দীর্ঘায়িত হয়।

আটক আন্দোলনকারী, আরও ক্ষোভ দানা বাঁধছে

অবরোধ না তুললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ হুঁশিয়ারি দেয়। এরপরই কয়েকজন আন্দোলনকারীকে আটক করা হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই ঘটনার পরেই আন্দোলন আরও জোরালো হতে শুরু করে। “জলের মধ্যে বাস করছি, তবু আমরা অপরাধী?” — প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।

পুরসভা ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা

এলাকার বাসিন্দাদের মতে, প্রতিবারই বর্ষাকালে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাস্তার ধারে নর্দমা থাকলেও তার সাফাই হয় না, ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল। অভিযোগ, পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর বা আধিকারিক কেউ খোঁজও নেন না। এ দিনের বিক্ষোভ শুধুমাত্র জলের জন্য নয়, এটা প্রশাসনের প্রতি দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

নির্বাচনের আগে চাপ বাড়ল পুরসভার উপর

প্রশাসনের আশ্বাস ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে এলেও আগামী দিনে এই জমা জল সমস্যাকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ যে আরও বাড়বে তা স্পষ্ট। সামনে পুরনির্বাচন—তার আগে নাগরিক ক্ষোভ প্রশাসনের কাছে অশনি সঙ্কেত বলেই মনে করা হচ্ছে।

Leave a comment