লাইফস্টাইল ডিজ়িজ় ভারতের: করোনার আগের এক দশকে উন্নত দেশগুলোতে লাইফস্টাইল সংক্রান্ত অসংক্রামক রোগে মৃত্যু কমেছে, কিন্তু ভারতে তা বেড়েছে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষণা অনুযায়ী, ২০১০–২০১৯ সালের মধ্যে ১৮৫টি দেশের তুলনায় ভারতের হার উল্টো। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

বিশ্বের তুলনায় ভারতের পরিস্থিতি
২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিশ্বের ১৮৫টি দেশে নারীদের ৮২% এবং পুরুষদের ৭৯% মৃত্যুহার কমেছে। উন্নত দেশ যেমন ডেনমার্ক ও ব্রিটেনে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, রাশিয়া এবং আফগানিস্তানে এনসিডি-জনিত মৃত্যুহার বেড়েছে।
ভারতের এনসিডি-জনিত ঝুঁকি
ভারতে হৃদরোগ, ক্যান্সার ও দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসযন্ত্রের অসুখে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়েছে। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে এবং গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজ়িসেসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৪০ বছরের বেশি বয়সী মহিলা এবং ৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।

উন্নত দেশগুলোর পদক্ষেপ
উন্নত দেশগুলো ২০০৫–২০১৪ সালের মধ্যে লাইফস্টাইল সংশোধনমূলক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাঙ্কফুড শিক্ষাঙ্গনে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, জাপানে শিশুদের স্কুলে নির্ধারিত সময়ের আগে জিম ও শারীরিক চর্চা বাধ্যতামূলক, এবং ইউরোপের স্কুলগুলোতে ‘স্লিম অ্যান্ড ফিট’ প্রকল্প রয়েছে।

ভারতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
ভারতে সদ্য ‘অয়েল বোর্ড’ ছাড়া বড়সড় প্রকল্প নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড়দের মধ্যে সচেতনতা বাড়লেও শিশুদের পর্যায়ে তা সঞ্চারিত না হলে আগামী প্রজন্ম উপকৃত হবে না। সতীনাথ মুখোপাধ্যায় ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, সরকার-প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপ জরুরি।

ভারতের এনসিডি-জনিত মৃত্যুহার বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের জনস্বাস্থ্যের জন্য চ্যালেঞ্জ। দ্রুত রাজনৈতিক ও সামাজিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ২০৪০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন। পাঠকরা স্বাস্থ্য সচেতন হোন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন এবং সরকারের স্বাস্থ্য উদ্যোগ ও পরামর্শ অনুসরণ করুন।













