ভারত ও আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। মার্কিন দলের নেতৃত্বে থাকছেন ব্রেন্ডন লিঞ্চ এবং ভারতের পক্ষে রাজেশ আগরওয়াল হলেন আলোচক। উভয় দেশ শুল্ক বিরোধ ও রপ্তানিকারকদের সমস্যা সমাধানের উপর জোর দিচ্ছে।
US-India Trade: ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শিথিল করার জন্য আলোচনা শুরু হয়েছে। মার্কিন দলের নেতৃত্বে আছেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ, যেখানে ভারতের পক্ষ থেকে বাণিজ্য বিভাগের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়াল প্রধান আলোচক। এই আলোচনা উভয় দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রিক।
শুল্ক বিরোধের কারণে উত্তেজনা বৃদ্ধি
আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কে তিক্ততা আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ভারতের উপর আরোপিত বিপুল শুল্কের পরে। বিশেষ করে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য এই শুল্ক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছিল। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার জন্য আমেরিকা ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করে, যা আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়ে দেয়।
মার্কিন দল ও ভারতীয় প্রতিনিধি
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ মার্কিন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার সাথে বিভিন্ন মার্কিন কর্মকর্তা রয়েছেন। ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য বিভাগের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়াল। লিঞ্চ ভারতে সোমবার গভীর রাতে পৌঁছেছেন এবং তিনি ভারতীয় দলের সাথে একদিনের বৈঠকে অংশ নেন।
ভারত শুল্ককে অন্যায্য বলে অভিহিত করেছে
ভারত মার্কিন শুল্ককে অন্যায্য বলে উল্লেখ করে বলেছে যে এটি ভারতীয় রপ্তানিকারকদের প্রভাবিত করছে। ফেব্রুয়ারিতে উভয় দেশের নেতারা কর্মকর্তাদের প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। চুক্তির প্রথম পর্যায় ২০২৫ সালের শরতের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। ষষ্ঠ দফা আলোচনা, যা ২৫-২৯ আগস্ট পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল, উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে স্থগিত করা হয়েছিল।
বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া
বাণিজ্য মন্ত্রকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে লিঞ্চ এবং ভারতীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে এই বৈঠকটি ষষ্ঠ দফা আলোচনা নয়, বরং এর পূর্ববর্তী আলোচনা হিসেবে দেখা উচিত। তিনি আরও জানান যে ভারত ও আমেরিকা এখন সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বাণিজ্যিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের ইতিবাচক মূল্যায়নের উষ্ণ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় বারবার বলেছে যে ভারত তার জ্বালানি সংগ্রহে জাতীয় স্বার্থ এবং বাজারের গতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেবে।
ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে স্পষ্ট করেছে যে এটি তার জাতীয় স্বার্থ এবং শক্তি সুরক্ষার প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে। ভারত জোর দিয়েছে যে সমস্ত বাণিজ্য চুক্তিতে কৃষক, দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদক এবং এমএসএমই (MSME)-এর স্বার্থের সুরক্ষা অগ্রাধিকার পাবে।