সোমবার উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় সবাইকে অবাক করে দিয়ে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য বিষয়ক কারণ দেখিয়ে এই ইস্তফা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে তিনি এই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
Jagdeep Dhankhar: ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের হঠাৎ ইস্তফার পরে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তিনি স্বাস্থ্য বিষয়ক কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। যদিও তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়নি, তবুও তিনি প্রায় দুই বছর আগে এই পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে, তিনি কী কী পেনশন এবং সুবিধা পাবেন এবং ভবিষ্যতে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী হবে?
উপরাষ্ট্রপতির বেতন এবং সুবিধা
ভারতের উপরাষ্ট্রপতির পদ একটি সাংবিধানিক এবং সম্মানজনক পদ। এই পদে থাকাকালীন তিনি বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকেন। ২০১৮ সালের বাজেট অনুসারে উপরাষ্ট্রপতির বেতন প্রতি মাসে ৪ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। এছাড়াও তিনি নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি পান:
- সরকারি বাসস্থানের সুবিধা।
- ট্রেন এবং প্লেনে বিনামূল্যে যাত্রা।
- সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা।
- সরকারি কাজকর্মের জন্য স্টাফ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।
ইস্তফা দেওয়ার পরে পেনশন এবং সুবিধা
প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি তাঁর বর্তমান বেতনের ৫০-৬০% পেনশন হিসেবে পেয়ে থাকেন। এই হিসেবে জগদীপ ধনখড় প্রতি মাসে প্রায় ২ থেকে ২.৫ লক্ষ টাকা পেনশন পেতে পারেন। যদিও এর পরিমাণ সরকারের নিয়ম এবং তাঁর কার্যকালের ওপর নির্ভর করবে। অন্যান্য প্রধান সুবিধা:
- বিনামূল্যে চিকিৎসা: প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি এবং তাঁর পরিবার সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পান।
- বিনামূল্যে ভ্রমণ: রেল এবং এয়ার ইন্ডিয়ার মতো স্থানে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুবিধা বজায় থাকবে।
- সরকারি বাসভবন অথবা হাউজিং অ্যালাউন্স: প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারি বাসভবন অথবা হাউজিং অ্যালাউন্স দেওয়া হয়।
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা: প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতিকে প্রয়োজন অনুযায়ী নিরাপত্তা প্রদান করা হয়।
ধনখড়ের ইস্তফার পরে কে কাজ সামলাবেন?
ধনখড়ের ইস্তফার পরে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যসভার কাজকর্মের নেতৃত্ব কে দেবেন? সংবিধানের ৯১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজ্যসভার উপ-সভাপতি (Deputy Chairman) সাময়িকভাবে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান অর্থাৎ অধ্যক্ষের কার্যভার সামলাবেন। যতক্ষণ না নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হচ্ছেন, ততক্ষণ উপ-সভাপতি এই দায়িত্ব পালন করবেন।
সংবিধানের ৬৩ থেকে ৭১ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং উপরাষ্ট্রপতি (নির্বাচন) নিয়ম, ১৯৭৪ অনুসারে, উপরাষ্ট্রপতির ইস্তফার ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা বাধ্যতামূলক। সেই কারণে, ধনখড়ের ইস্তফার ফলে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ এর আগে নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা সাংবিধানিকভাবে প্রয়োজনীয়। নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে শীঘ্রই প্রক্রিয়া শুরু করবে।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন কারা?
উপরাষ্ট্রপতিকে সংসদের উভয় কক্ষের (লোকসভা এবং রাজ্যসভা) সদস্যরা নির্বাচন করেন। নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব প্রণালী (Proportional Representation) এবং একক হস্তান্তরযোগ্য ভোট (Single Transferable Vote) প্রণালী ব্যবহার করা হয়। সাংসদরা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেন। এই ভোট একাধিক প্রার্থীর জন্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেওয়া যেতে পারে।
- ধনখড় দেশের তৃতীয় উপরাষ্ট্রপতি যিনি কার্যকাল শেষ হওয়ার আগে ইস্তফা দিলেন।
- ইস্তফার পরে পেনশন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাগুলিতে কোনো कटौती হয় না।
- উপরাষ্ট্রপতির ইস্তফার পরে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করা বাধ্যতামূলক।
- ডিপুটি চেয়ারম্যান ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যনির্বাহী অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করবেন।