হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর শ্রাবণ সংক্রান্তি উপলক্ষে মান্ডি জেলার প্রসিদ্ধ বাবা ভুতনাথ মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে প্রদেশবাসীর সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। এই উপলক্ষে তিনি প্রদেশে চলমান ত্রাণ কার্যের পর্যালোচনাও করেন এবং মিডিয়ার সাথে আলাপকালে দানশীল ব্যক্তিদের ত্রাণ কার্যে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রেখে ভেতরের এবং গ্রামীণ এলাকা পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানান।
দুর্গম অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছানো জরুরি
জয়রাম ঠাকুর বলেছেন যে প্রদেশের অনেক মানুষ তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ত্রাণ কার্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে অনেক এলাকা রয়েছে, বিশেষ করে যেগুলো সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, সেখানে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো যাচ্ছে না। তিনি অনুরোধ করেছেন ত্রাণ কার্যে নিযুক্ত ব্যক্তিরা যেন শুধুমাত্র রাস্তার ধারে বসবাসকারী গ্রামগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকেন, বরং কঠিন পরিস্থিতিতেও দুর্গম এলাকায় গিয়ে সেখানকার মানুষদের সাহায্য করেন।
প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ করুন
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছেন যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের আগে যদি দানশীল ব্যক্তিরা প্রশাসন বা স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করেন, তাহলে সাহায্য আরও বেশি কার্যকরীভাবে অভাবীদের কাছে পৌঁছাতে পারে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে প্রশাসন এবং তিনি নিজেও এই ধরনের প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন। ঠাকুর বলেছেন যে পরিকল্পিতভাবে ত্রাণ সাহায্য করলে বেশি সংখ্যক মানুষ উপকৃত হতে পারে।
থুনাগ এবং জাঞ্জেইলিতে ত্রাণ কার্যের পর্যালোচনা
জয়রাম ঠাকুর তার সরাজ বিধানসভা কেন্দ্রের থুনাগ এবং জাঞ্জেইলি মহকুমার পঞ্চায়েতের প্রধান ও প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করে ত্রাণ কার্যের পর্যালোচনা করেছেন। এই বৈঠকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি এবং সেখানে চলমান ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। তিনি আধিকারিকদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে তাৎক্ষণিকভাবে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।
পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরেন
ত্রাণ পর্যালোচনা বৈঠকে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ এলাকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয়তাগুলো জানান। জয়রাম ঠাকুর সকলের কাছে দুর্যোগে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ চেয়েছেন, যাতে সেই তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা তৈরি করে ত্রাণ কার্যকে আরও কার্যকর করা যায়। তিনি পঞ্চায়েত স্তরে দ্রুত, সমন্বিত এবং দায়বদ্ধ ত্রাণ কার্য নিশ্চিত করার আবেদনও জানিয়েছেন।
দানশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এই সংকটকালে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা দানশীল ব্যক্তি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন যে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রচেষ্টার ফলেই হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অবলম্বন খুঁজে পাচ্ছে। জয়রাম ঠাকুর বলেছেন যে প্রদেশজুড়ে পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অংশ থেকেও মানুষ হিমাচলের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসছেন, এটি প্রদেশের ঐক্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতার চেতনাকে প্রতিফলিত করে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও কেন্দ্র সরকারকে ধন্যবাদ
জয়রাম ঠাকুর এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্র সরকারের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে কেন্দ্র সরকার মিড ডে মিল প্রকল্পের জন্য ২,৬৬৫ কোটি টাকা এবং প্রাকৃতিক কৃষিকাজকে উৎসাহিত করার জন্য ১৮ কোটি টাকা জারি করেছে। তিনি বলেন যে এই অর্থ প্রদেশের উন্নয়ন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে।
রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন যে কেন্দ্র দ্বারা পাঠানো ত্রাণ রাশি যেন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার সাথে অভাবীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। তিনি বলেন যে এই কঠিন সময়ে কোনো প্রকার বৈষম্য যেন না হয় এবং প্রত্যেক যোগ্য ব্যক্তি যেন সময়মতো যথাযথ সাহায্য পায়, তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
নিষ্ঠা ও সমর্পণের সাথে দায়িত্ব পালন করুন
জয়রাম ঠাকুর সকল পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের কাছে আবেদন করেছেন যে তারা যেন সংকটের এই সময়ে সম্পূর্ণ নিষ্ঠা ও সমর্পণের সাথে ত্রাণ কার্যে যুক্ত থাকেন। তিনি বলেন যে স্থানীয় স্তরে সক্রিয় ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বের মাধ্যমেই ত্রাণ প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হতে পারে। পঞ্চায়েত স্তরে কর্মরত মানুষদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের সক্রিয়তার মাধ্যমেই অভাবীদের কাছে দ্রুত সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব।