এই বছর কালাষ্টমী তিনটি বিরল যোগ - সিদ্ধি যোগ, রবি যোগ এবং শিববাস যোগ - নিয়ে আসছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে ভগবান কাল ভৈরবের পূজা করলে জীবনের নেতিবাচক শক্তি দূর হয় এবং সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হতে পারে।
কালাষ্টমী ২০২৫: এই বছরের কালাষ্টমী বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথি, অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে, ভগবান কাল ভৈরবের পূজার জন্য শুভ মুহূর্ত। এই দিনে তিনটি বিরল যোগ - সিদ্ধি যোগ, রবি যোগ এবং শিববাস যোগ - তৈরি হচ্ছে, যা পূজার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্মীয় পণ্ডিতদের মতে, এই দিনে করা উপাসনা ব্যক্তিকে জীবনের নেতিবাচক শক্তি থেকে মুক্তি দেয় এবং তার সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয়। তাই ১৪ সেপ্টেম্বর ব্রত ও পূজা বিশেষভাবে ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়।
ব্রত-র শুভ মুহূর্ত ও তিথি
পঞ্জিকা অনুসারে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ভোর ৫:০৪ মিনিটে শুরু হবে এবং ১৫ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত্রি ৩:০৬ মিনিটে শেষ হবে। ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, কালাষ্টমীর ব্রত ও পূজা-আরাধনা ১৪ সেপ্টেম্বর করা শুভ ও উত্তম বলে মনে করা হয়। এই দিনে ব্রত পালন করলে এবং ভগবান কাল ভৈরবের পূজা করলে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে এবং মানসিক শান্তিও পাওয়া যায়।
তিনটি বিরল যোগের তাৎপর্য
- সিদ্ধি যোগ: এই যোগ কার্য সিদ্ধি ও সফলতা অর্জনে সহায়ক বলে মনে করা হয়। এই যোগে করা ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও পূজা পূর্ণ বিশ্বাস ও শুদ্ধতার সঙ্গে সম্পন্ন করলে তা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়।
- রবি যোগ: সূর্য দেবের সঙ্গে যুক্ত এই যোগ অত্যন্ত প্রভাবশালী। রবি যোগে করা পূজা ও প্রতিকার ব্যক্তিকে শারীরিক রোগ থেকে মুক্তি দেয় এবং শত্রুদের উপর বিজয় অর্জনে সহায়ক হয়।
- শিববাস যোগ: এই যোগে ভগবান শিব মাতা পার্বতীর সঙ্গে অবস্থান করেন। এই দিনে করা পূজা ও অভিষেক সরাসরি শিবের কাছে পৌঁছায়, যার ফলে তাঁর কৃপা লাভ হয় এবং ভক্তদের সমস্ত দুঃখ ও সমস্যা দূর হয়।
কালাষ্টমীর পূজা বিধি ও মন্ত্র
এই দিনে ব্রত পালনের সঙ্গে সঙ্গে ভগবান কাল ভৈরবের বিশেষ পূজা-আরাধনা করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করুন। কাল ভৈরবের মূর্তি বা ছবি স্থাপন করে গঙ্গাজল দিয়ে অভিষেক করুন এবং সরিষার তেলের প্রদীপ জ্বালান। "ওঁ কালভৈরবায় নমঃ" মন্ত্রটি ১০৮ বার জপ করুন এবং কালো তিল, উড়দ ডাল, গুড় এবং রুটি ভোগ হিসেবে নিবেদন করুন। পূজার পর কাল ভৈরব চালিশা ও ভৈরব অষ্টক পাঠ করুন। সন্ধ্যায় কুকুরদের খাবার খাওয়ানোও শুভ বলে মনে করা হয়, কারণ এদের ভগবান ভৈরবের বাহন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কালাষ্টমীর তাৎপর্য
কাল ভৈরব সময় ও মৃত্যুর দণ্ডাধিপতি হিসেবে পূজিত হন। তাঁর পূজা-আরাধনা করলে ব্যক্তি অকাল মৃত্যু, ভয় ও শত্রুদের বাধা থেকে মুক্তি পায়। কালাষ্টমীর দিনে আরাধনা করলে জীবনে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার হয় এবং পূর্বপুরুষদের (পিতর) কৃপা লাভ হয়। এছাড়াও, এই দিনে করা পূজায় ব্যবসা, চাকরি এবং অর্থ সংক্রান্ত সমস্যাও দূর হয়।
এইবারের কালাষ্টমী তার বিরল যোগ ও ফলপ্রসূ পূজার কারণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আপনিও যদি আপনার ইচ্ছা পূরণের এবং জীবনে ইতিবাচক শক্তির সান্নিধ্য চান, তবে ১৪ সেপ্টেম্বর ব্রত ও পূজা অবশ্যই করুন। আরও তথ্যের জন্য এবং পূজার পদ্ধতি জানতে, অনুগ্রহ করে নির্ভরযোগ্য পঞ্জিকা ও ধর্মীয় নির্দেশিকা দেখুন।