কর্ণাটকে নেতৃত্ব পরিবর্তনের জল্পনা উড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, আগামী পাঁচ বছর তিনিই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন এবং পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনও তাঁর নেতৃত্বেই লড়া হবে।
Karnataka: কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া নেতৃত্ব পরিবর্তনের জল্পনার উপর সম্পূর্ণভাবে ইতি টেনেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন এবং পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনও কংগ্রেসের নেতৃত্বেই লড়বেন। উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের দিল্লি সফর এবং দুই নেতার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের জল্পনার মধ্যে এই মন্তব্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
দিল্লিতে সিদ্দারামাইয়া ও ডি কে শিবকুমারের উপস্থিতিতে রাজনৈতিক জল্পনা বৃদ্ধি
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার দুজনেই এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন। উপমুখ্যমন্ত্রী নতুন তৈরি হওয়া মুখ্যমন্ত্রীর সুটে উঠেছেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া পুরাতন সুটে অবস্থান করছেন। দুই শীর্ষ নেতাই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছেন।
এই সাক্ষাৎ এবং দিল্লি সফরকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে কর্ণাটকের সরকারে নেতৃত্ব পরিবর্তনের জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে। এমনও শোনা যাচ্ছিল যে, সিদ্দারামাইয়াকে কোনো কেন্দ্রীয় ভূমিকায় আনা হতে পারে এবং ডি কে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে।
'চেয়ার খালি নেই', বললেন সিদ্দারামাইয়া
ইন্ডিয়া টুডের শীর্ষ সাংবাদিক রাজদীপ সারদেসাইয়ের সঙ্গে এক বিশেষ बातचीतকালে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এই সমস্ত জল্পনাকে সম্পূর্ণভাবে খারিজ করে দেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, "চেয়ার এখনো খালি নেই। আগামী পাঁচ বছর আমিই মুখ্যমন্ত্রী থাকব এবং পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনেও কংগ্রেসের নেতৃত্ব আমিই দেব।"
বিজেপির অভিযোগকে রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর হিসেবে উল্লেখ
মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি কর্তৃক উত্থাপিত ৭০ শতাংশ কমিশনের সরকার-এর মতো অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন। তিনি এটিকে বিরোধী দলের সাধারণ রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জনগণের আমাদের প্রকল্পগুলির দ্বারা সুবিধা হচ্ছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে কোনো জনরোষ (Anti-Incumbency) নেই।
ডি কে শিবকুমারকে 'কিংবদন্তি' হিসেবে অভিহিত
সিদ্দারামাইয়া তাঁর ডেপুটি ডি কে শিবকুমারেরও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, "ডি কে শিবকুমার একজন কিংবদন্তি। আমাদের সরকারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে এবং আমরা দুজনেই মিলে কর্ণাটককে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।"
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে কংগ্রেস সরকার গঠনের পর থেকেই এই আলোচনা চলে আসছে যে, দুই নেতার মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে কোনো অভ্যন্তরীণ চুক্তি রয়েছে, যেখানে আড়াই বছর অন্তর দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী পদ সামলাবেন। যদিও, এখন পর্যন্ত উভয় নেতাই এই বিষয়ে অস্বীকার করেছেন।
শিবকুমার এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সাক্ষাতে আলোচনা তুঙ্গে
ডি কে শিবকুমার ৮ জুলাই দিল্লি পৌঁছান এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই সাক্ষাৎ প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী ছিল, কিন্তু শিবকুমার তাঁর কোনো ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেননি, যেখানে তিনি সাধারণত তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক সাক্ষাতের ছবি শেয়ার করেন। এর ফলে নেতৃত্ব পরিবর্তনের জল্পনা আরও বাড়ে।
অন্যদিকে, সিদ্দারামাইয়াও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছেন, তবে তিনিও আলাদাভাবে দেখা করতে চান। এই সমস্ত কার্যকলাপ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে যে, কংগ্রেস হাইকমান্ড কর্ণাটকে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে।