লখনউয়ে দ্রুত গতির থারের ধাক্কায় ই-রিকশায় ২ জনের মৃত্যু, আহত ৬; গ্রেপ্তার অভিযুক্ত চালক

লখনউয়ে দ্রুত গতির থারের ধাক্কায় ই-রিকশায় ২ জনের মৃত্যু, আহত ৬; গ্রেপ্তার অভিযুক্ত চালক

লখনউ ক্যান্টনমেন্টে দ্রুত গতির থার একটি ই-রিকশাকে ধাক্কা মারে, যার ফলে দুজনের মৃত্যু এবং ছয়জন আহত হন। পুলিশ অভিযুক্ত অক্ষয় সিংকে গ্রেপ্তার করেছে, যে মার্চেন্ট নেভির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

লখনউ: উত্তরপ্রদেশের লখনউ ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা একাধিক পরিবারের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। বানিয়া মোহাল মোড়ের কাছে দ্রুত গতির একটি থার একটি ই-রিকশাকে ধাক্কা মারে, যার ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয় এবং ছয়জন গুরুতর আহত হন। পুলিশ অভিযুক্ত অক্ষয় সিংকে গ্রেপ্তার করেছে এবং মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।

লখনউতে ই-রিকশা দুর্ঘটনার অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

শনিবার সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে সাতটায় লখনউ ক্যান্টনমেন্টের বানিয়া মোহাল মোড়ে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। খাটু শ্যাম মন্দির থেকে দর্শন করে ফিরছিলেন আট বন্ধু একটি ই-রিকশায় চড়ে। হঠাৎ দ্রুত গতিতে আসা একটি থার ই-রিকশাটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ঘটনাস্থলে আর্তনাদ শুরু হয় এবং পথচারীরা অবিলম্বে পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সকে খবর দেন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকল আহতকে নিকটস্থ ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করায়। এই দুর্ঘটনায় ই-রিকশা চালক উমেশ সাহু এবং তার বন্ধু মোহিত রাজপুতের মৃত্যু হয়েছে, এবং অন্য ছয়জন গুরুতর আহত অবস্থায় রয়েছেন। পুলিশ অভিযুক্ত অক্ষয় সিংকে একই রাতে সুশান্ত গল্ফ সিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

দুর্ঘটনায় উমেশ ও মোহিতের বাড়িতে শোকের ছায়া

এই দুর্ঘটনা উমেশ এবং মোহিতের পরিবারের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। রবিবার যখন দুজনের মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছায়, তখন কান্নাকাটি আর হাহাকার শুরু হয়। শেরপুর লবল গ্রামের বাসিন্দা উমেশের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। পিতার আগেই মৃত্যু হয়েছিল, তাই উমেশই ছিল পুরো পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। ই-রিকশা চালিয়ে সে সংসারের খরচ চালাত এবং সম্প্রতি কিস্তিতে একটি নতুন রিকশা কিনেছিল।

মোহিত রাজপুতের পরিস্থিতি আরও বেদনাদায়ক। তার বিয়ে এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে হয়েছিল এবং তার স্ত্রী সন্ধ্যা গর্ভবতী। পরিবার সারারাত তাকে স্বামীর মৃত্যুর খবর দেয়নি। রবিবার যখন মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছায়, তখন সন্ধ্যা বারবার জ্ঞান হারাতে থাকে। গ্রামের লোকেরা পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু শোকের পরিবেশ প্রতিটি মুখে স্পষ্ট ছিল।

সিসিটিভি ফুটেজে ই-রিকশা দুর্ঘটনার সত্য উন্মোচিত

পুলিশ তদন্তের সময় আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে। ফুটেজে থারের দ্রুত গতি এবং ই-রিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের সম্পূর্ণ দৃশ্য সামনে আসে। পুলিশ জানিয়েছে যে অভিযুক্ত গাড়িটি খুব দ্রুত চালাচ্ছিল এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ই-রিকশার সঙ্গে ধাক্কা মারে।

ঘটনার পর অভিযুক্ত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পুলিশ লোকেশন ট্র্যাকিং এবং নিবিড় তদন্তের পর তাকে তার ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করে। ক্যান্টনমেন্ট থানায় রায়বেরেলীর বাসিন্দা মহাবীর প্রসাদের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে অভিযুক্ত অক্ষয় সিং মার্চেন্ট নেভির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে

ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ জানিয়েছে যে দুর্ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করা হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসা ট্রমা সেন্টারে চলছে এবং তাদের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধ করতে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে কঠোরতা বাড়ানো হবে।

এই ঘটনা সড়ক নিরাপত্তা এবং দ্রুত গতির গাড়ির সমস্যা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছে। পরিবারগুলো তাদের অবলম্বন হারিয়েছে এবং গ্রামগুলোতে শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে। এই দুর্ঘটনা শুধু দুটি পরিবারকে নয়, বরং পুরো সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

Leave a comment