মহারাজগঞ্জ-বসন্তপুর রাস্তার বেহাল দশা: গ্রামবাসীদের ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

মহারাজগঞ্জ-বসন্তপুর রাস্তার বেহাল দশা: গ্রামবাসীদের ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

হারাজগঞ্জ-বসন্তপুর পথের ঘোষণা অনেক দিন আগেই হয়েছিল, কিন্তু আজ পর্যন্ত এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। রাস্তার বেহাল দশার কারণে গ্রামবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

পাটনা: বিহার রাজ্যে 2025 সালের বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে মহারাজগঞ্জ-বসন্তপুর রাস্তার বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে। গ্রামবাসীদের মধ্যে এতই ক্ষোভ জমেছে যে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে — যদি দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু না হয়, তাহলে তারা তাদের সাংসদ ও বিধায়কের ঘেরাও করবে।

আসলে, মহারাজগঞ্জ-বসন্তপুর পথের মেরামত ও পুনর্নির্মাণের ঘোষণা অনেকবার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজের সূচনা হয়নি। 2016 সালে নির্মিত এই রাস্তার অবস্থা এখন এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে বর্ষাকালে এখান দিয়ে যাওয়া যেন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া।

2016 সালে তৈরি হওয়া রাস্তা কেন ভেঙে গেল?

গ্রামবাসীদের মতে, এই রাস্তা নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল। এর ফলস্বরূপ, কয়েক মাসের মধ্যেই রাস্তায় জায়গায় জায়গায় গর্ত তৈরি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা প্রমিত সিং বলেছেন, “যখন এই রাস্তা তৈরি হয়েছিল, তখনই লোকেরা খারাপ মানের অভিযোগ করেছিল। কিন্তু কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কেন্দ্রীয় দলও তদন্ত করেছিল, তবুও রক্ষণাবেক্ষণের নামে কিছুই হয়নি।

নিয়ম অনুযায়ী রাস্তার পাঁচ বছর পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা ছিল, কিন্তু সেই রক্ষণাবেক্ষণ কখনোই হয়নি। এখন পরিস্থিতি এমন যে রাস্তা সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে এবং গ্রামবাসীরা জীবন হাতে নিয়ে এই রাস্তা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে।

বৃষ্টি বাড়িয়েছে সমস্যা

বৃষ্টির সময় এই রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। কাদা ও জলভর্তি গর্তগুলি যেন এক জাল তৈরি করে, যেখানে পিছলে পড়ে যাওয়ার ঘটনা এখন সাধারণ। রিঙ্কু সিং, সুজিত কুমার এবং অনিল সিং-এর মতো গ্রামবাসীরা বলছেন, “বৃষ্টিতে রাস্তার গর্তগুলিতে জল জমে যায়। রাতে তো বোঝা যায় না যে গর্ত কোথায় আর সমতল ভূমি কোথায়। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, যদি কোনো রোগীকে জরুরি অবস্থায় এই রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে।

সাংসদ-বিধায়কের উপর ক্ষোভ, ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন যে তারা তাদের এলাকার সাংসদ ও বিধায়কের কাছে বহুবার অভিযোগ জানিয়েছেন, কিন্তু প্রতিবারই শুধু আশ্বাস মিলেছে। এখন মানুষের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। স্বামীনাথ প্রসাদ বলেছেন, প্রতিবার বলা হয় বাজেট আসবে, কাজ শুরু হবে, কিন্তু পাঁচ বছর ধরে শুধু কাগজে-কলমে কাজ চলছে। যদি এবারও কাজ শুরু না হয়, তাহলে আমরা বিধায়ক-সাংসদকে ঘেরাও করব। গ্রামবাসীরা স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে এবার নির্বাচনের আগে জবাব পাওয়ার জন্য তারা আন্দোলনে নামতে প্রস্তুত।

আসলে, মহারাজগঞ্জ-বসন্তপুর পথ শুধু একটি রাস্তা নয়, বরং এটি অনেক গ্রামকে প্রধান বাজার এবং ব্লক সদর দফতরের সাথে যুক্ত করে। এই রাস্তা দিয়েই অ্যাম্বুলেন্স, স্কুল বাস, ওষুধপত্র এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ হয়। এই কারণে, রাস্তার বেহাল দশার কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমাগত বাড়ছে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, যদি জনপ্রতিনিধিরা মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে না পারেন, তাহলে তাদের ভোট চাওয়া উচিত নয়।

Leave a comment