ধর্ম শান্তির পথ এবং সমাজের ঐক্যের জন্য জরুরি: মোহন ভাগবত

ধর্ম শান্তির পথ এবং সমাজের ঐক্যের জন্য জরুরি: মোহন ভাগবত

মোহন ভাগবত নাগপুরে ধর্ম জাগরণ ন্যাস কার্যালয় উদ্বোধনকালে ধর্মকে শান্তির পথ হিসাবে বর্ণনা করেন এবং ‘ছাওয়া’ চলচ্চিত্রের উদাহরণ দিয়ে ধর্মের প্রতি দায়বদ্ধতাকে সমাজের ঐক্যের জন্য প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেন।

Mohan Bhagwat: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)-এর সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত নাগপুরে ধর্ম জাগরণ ন্যাসের নতুন কার্যালয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে ধর্ম, সমাজ এবং শান্তি নিয়ে গভীর চিন্তা প্রকাশ করেছেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি মারাঠি চলচ্চিত্র ‘ছাওয়া’র উল্লেখ করে বলেন যে, ধর্মের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ কীভাবে সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সাহায্য করে।

ধর্মকে সত্য ও পবিত্র কর্তব্য হিসাবে বর্ণনা

ভাগবত তাঁর ভাষণের শুরুতে বলেন যে, ধর্ম কেবল রীতিনীতি বা পূজা-পদ্ধতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এমন একটি সত্য যা জীবনকে সঠিক পথে চালিত করে। তিনি বলেন, "ধর্ম একটি পবিত্র কাজ। যখন আমরা দায়িত্বের সঙ্গে ধর্ম পালন করি, তখন সমাজে শান্তি, সহনশীলতা এবং সংহতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে গড়ে ওঠে।" তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, সংকটের সময়ে ধর্ম মানুষকে সাহস, মনোবল এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিশা দেখায়। এই কারণেই সমাজে স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ধর্ম পালন করা অপরিহার্য।

‘ছাওয়া’ থেকে পাওয়া প্রেরণা, संभाजी মহারাজের আত্মত্যাগ উদাহরণ তৈরি করলো

ভাষণে মোহন ভাগবত বিশেষভাবে মারাঠি চলচ্চিত্র ‘ছাওয়া’র কথা উল্লেখ করেন, যা ছত্রপতি संभाजी মহারাজের জীবন ও সংগ্রামের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন যে, এই চলচ্চিত্রটি স্পষ্ট করে দেয় যে ধর্মের প্রতি দায়বদ্ধতা কেবল রাজা বা সেনাপতিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সাধারণ নাগরিকরাও একই দৃঢ়তার সঙ্গে ধর্মের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, "ছাওয়া শুধু একটি ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র নয়, বরং একটি আদর্শিক বার্তা। যখন আমরা এই ধরনের চরিত্র থেকে প্রেরণা পাই, তখন আমাদের সংকল্পও ততটাই দৃঢ় হয়। যে ধর্মের পথে অবিচল থাকে, সে কোনো চ্যালেঞ্জের কাছে হারে না।"

বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্যের শিক্ষা দেয় হিন্দু ধর্ম

ভাগবত স্পষ্ট করে বলেন যে, বিশ্বের আজকে সেই ধরনের ধর্মের প্রয়োজন, যা বিভিন্নতার মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন করতে পারে। তিনি জানান যে, হিন্দু ধর্ম শুধু বৈচিত্র্যকে স্বীকার করে না, বরং তার মধ্যে আপনত্বও খুঁজে পায়। তিনি বলেন, "আমরা হয়তো ভাষা, জাতি, পোশাক বা ঐতিহ্যে আলাদা, কিন্তু ধর্ম আমাদের যুক্ত করে। বৈচিত্র্য আমাদের সমাজের বৈশিষ্ট্য, দুর্বলতা নয়। ধর্ম এটাই শেখায় যে আমরা দেখতে আলাদা হলেও, আসলে একই।"

ধর্ম থেকে বিচ্যুত নয় সমাজ, এটাই সকলের দায়িত্ব

মোহন ভাগবত আরও বলেন যে, শুধু সরকার বা প্রতিষ্ঠান নয়, সমাজের প্রতিটি ব্যক্তির এই দায়িত্ব যে সে যেন ধর্মের পথ থেকে বিচ্যুত না হয়। তিনি বলেন যে, যদি মানুষ ধর্ম অনুযায়ী আচরণ করে, তবে কোনো অপরাধ হবে না, কোনো সংঘাত হবে না। সমাজে ঘৃণার কোনো স্থান থাকবে না। তিনি আরও বলেন, "যদি প্রত্যেক ব্যক্তি স্থির করে যে সে তার জীবনে ধর্মকে কেন্দ্রে রাখবে, তবে কোনো আইনের প্রয়োজন হবে না। ধর্মই জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করবে।"

দিল্লিতে হবে জাতীয় संवाद श्रृंखला

এই অনুষ্ঠানে ভাগবত আরও একটি বড় তথ্য জানান — RSS-এর शताब्दी বর্ষের অনুষ্ঠানের শুরুতে দিল্লি-তে ২৬, ২৭ এবং ২৮শে আগস্ট তিন দিনের জাতীয় संवाद-এর আয়োজন করা হবে। এই অনুষ্ঠানের শিরোনাম হবে ‘সংঘ যাত্রার ১০০ বছর – নতুন দিগন্ত’। এই संवाद অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত স্বয়ং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সংঘ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে, বিশেষ করে যুবসমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের যুক্ত করার চেষ্টা করবে। এটি একটি বড় আউটরিচ প্রোগ্রাম হবে, যেখানে বিরোধী দলগুলিকেও আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

শতब्दी বর্ষের আগে বড় বার্তা

RSS এই বছর বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানে তার প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্ণ করছে। ভাগবতের এই বক্তব্য শুধু ধর্মের ভূমিকা নিয়ে ছিল না, বরং এটি ইঙ্গিতও ছিল যে সংঘ এখন তার শতাব্দীর দিকে এগিয়ে নতুন চিন্তা ও নতুন সামাজিক সংলাপের দিকে কাজ করবে।

Leave a comment