নজিব আহমেদ নিখোঁজ মামলা: সিবিআইয়ের ক্লোজার রিপোর্ট গ্রহণ আদালতের

নজিব আহমেদ নিখোঁজ মামলা: সিবিআইয়ের ক্লোজার রিপোর্ট গ্রহণ আদালতের

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর ছাত্র নজিব আহমেদের নিখোঁজ হওয়ার মামলায় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) ক্লোজার রিপোর্ট গ্রহণ করেছে। আদালত সোমবার শুনানির সময় স্পষ্ট করে জানায় যে, ভবিষ্যতে যদি কোনো নতুন এবং সুনির্দিষ্ট সূত্র পাওয়া যায়, তাহলে সিবিআই তদন্ত পুনরায় শুরু করতে পারে।

উল্লেখ্য, নজিবের মা ২০১৮ সালে এই ক্লোজার রিপোর্টের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন, যা আদালত খারিজ করে দিয়েছে। আদালত বলেছে, সমস্ত সম্ভাব্য দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে এবং কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যা পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে যেতে পারে।

আট বছর পরেও কোনো সন্ধান নেই

২৭ বছর বয়সী নজিব আহমেদ, যিনি জেএনইউ-তে এমএসসি বায়োটেকনোলজির প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন, ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর রহস্যজনক পরিস্থিতিতে নিখোঁজ হন। জানা যায়, নিখোঁজ হওয়ার একদিন আগে তার সাথে ক্যাম্পাসে এবিভিপি-র সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ছাত্রের তীব্র বিবাদ হয়। এই রহস্যজনক ঘটনার পর দেশজুড়ে ছাত্র এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং বিষয়টি মিডিয়া ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে।

দিল্লি পুলিশ এবং পরে সিবিআই এই ঘটনার বহু বছর ধরে তদন্ত করেছে, কিন্তু নজিবের নিখোঁজ হওয়ার কোনো স্পষ্ট কারণ বা সূত্র আজও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

আদালতের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

• সিবিআই-এর তদন্তে কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়নি: আদালত মনে করেছে যে সংস্থাটি সমস্ত সম্ভাব্য দিকগুলি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখেছে এবং কোনো ধরনের গাফিলতি করেনি।

• ফোন এবং ল্যাপটপ থেকে কোনো সূত্র মেলেনি: নজিবের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ থেকেও কোনো উপযোগী সূত্র পাওয়া যায়নি।

• মানসিক চাপের ইঙ্গিত: চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি এবং মায়ের বয়ান অনুযায়ী, নজিব মানসিক চাপে ভুগছিলেন।

• হোস্টেলে ফিরে না আসার সম্ভাবনা: আদালত সফদরজং হাসপাতালে যাওয়ার পর নজিবের হোস্টেলে ফিরে না আসার সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে।

• মারধর ও নিখোঁজ হওয়ার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই: আদালত বলেছে, কথিত ঝগড়া এবং নজিবের নিখোঁজ হওয়ার মধ্যে কোনো প্রত্যক্ষ বা পারিপার্শ্বিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আইন-আদালতের প্রক্রিয়ার সমাপ্তি

আদালত তার রায়ে আবেগপূর্ণ মন্তব্য করে বলেছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, যেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে, সেখানে নজিবের মা এবং পরিবারের জন্য এখনও কোনো সমাধান নেই। আমরা আশা করি, নজিব খুব শীঘ্রই ফিরে আসবে।

জেএনইউ-এর মতো ক্যাম্পাসগুলিতে ছাত্রাবাস নির্বাচনের সময় বিবাদ সাধারণ ঘটনা, কিন্তু আদালত স্পষ্ট করেছে যে, শুধুমাত্র এই ভিত্তিতে কোনো ছাত্রকে নিখোঁজ হওয়ার জন্য দায়ী করা যায় না, বিশেষ করে যখন কোনো দৃঢ় প্রমাণ না থাকে।

Leave a comment