কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর নেপালে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী পদটি খালি। কূলমান ঘিসিং সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী, অন্যদিকে বালেন শাহ এবং সুশীলা কার্কিও এই দৌড়ে রয়েছেন। জেন-জেড আন্দোলন রাজনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে।
Nepal: নেপালে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর দেশটির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ওলির পদত্যাগের পরপরই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর জন্য বেশ কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী সামনে এসেছেন। এই পদের জন্য এখনও পর্যন্ত কোনো স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কাঠমান্ডুতে নেপাল সেনার সদর দফতরের বাইরে জেন-জেড গোষ্ঠীগুলির মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে, যা অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে।
সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী
প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রধান নামগুলোর মধ্যে রয়েছেন কাঠমান্ডুর মেয়র এবং র্যাপার বলেন্দ্র শাহ বালেন, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি এবং নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন প্রধান কূলমান ঘিসিং। কূলমান ঘিসিং জনগণ এবং রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তিনি নেপালে বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের জন্য এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছেন।
বলেন্দ্র শাহ বালেন তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় এবং তার র্যাপার ভাবমূর্তি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগের জন্য পরিচিত। অন্যদিকে, সুশীলা কার্কি প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি হওয়ায় প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রাখেন, কিন্তু তার বয়স এবং সাংবিধানিক বিধিনিষেধ তার নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
ঘিসিং-এর প্রযুক্তিগত দক্ষতা
কূলমান ঘিসিং-এর জন্ম ১৯৭০ সালের ২৫শে নভেম্বর রামেছাপে। তিনি ভারতের জামশেদপুরের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়াশোনা করেন এবং পরে নেপালের পুলচক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে তার পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি এমবিএ করেন এবং প্রশাসনিক নেতৃত্বের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন। তার প্রযুক্তিগত এবং ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা তাকে নেপালে সমস্যা সমাধানের একজন ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
জেন-জেড আন্দোলন
জেন-জেড আন্দোলন নেপালে তরুণদের নতুন সরকারের দাবির প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই আন্দোলনে তরুণরা দুর্নীতি, বেকারত্ব এবং সুশাসনের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন। আন্দোলনের সময়কার সহিংসতা ও প্রতিবাদের পর প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হতে হয়। এই আন্দোলন তরুণদের কণ্ঠস্বরকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শক্তিশালী করার একটি প্রচেষ্টা।
সহিংসতা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা
কাঠমান্ডুতে সেনার সদর দফতরের কাছে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন জেন-জেড সমর্থক একে অপরের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। বলেন্দ্র শাহ এবং সুশীলা কার্কির সমর্থকরা একে অপরের সাথে লড়াই করে, যা একটি উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এই সময় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নেপাল পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে বিলম্ব এবং অপর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া
প্রধানমন্ত্রী পদ খালি হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পৌডেল এবং নেপালের সেনাপ্রধান অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক নিয়ম এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতির অনুসরণ করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য হলো শান্তি বজায় রাখা এবং তরুণদের নতুন দাবিগুলিকে বিবেচনায় রাখা।