২০২৫-এর পিতৃপক্ষ: চন্দ্রগ্রহণের সংযোগে বিশেষ তাৎপর্য

২০২৫-এর পিতৃপক্ষ: চন্দ্রগ্রহণের সংযোগে বিশেষ তাৎপর্য

হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা থেকে আশ্বিন মাসের অমাবস্যা পর্যন্ত ১৫ দিনের সময় পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়, যাকে পিতৃপক্ষ বা শ্রাদ্ধপক্ষ বলা হয়। এই সময়টিতে মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য তর্পণ, পিণ্ডদান এবং দান-পুণ্য করে। ২০২৫ সালে পিতৃপক্ষ শুরু হচ্ছে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে এবং চলবে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এইবার শুরু হওয়ার আগে একটি মহাজাগতিক ঘটনা ঘটছে, যা এই তারিখগুলোকে আরও বিশেষ করে তুলছে।

৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রগ্রহণ

এইবার পিতৃপক্ষ শুরু হচ্ছে ঠিক সেই দিনেই, যেদিন বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণটি হতে চলেছে। অর্থাৎ, ৭ সেপ্টেম্বর একদিকে পিতৃপক্ষের প্রথম দিন হবে, অন্যদিকে সেই রাতেই চন্দ্রগ্রহণও লাগবে। এই চন্দ্রগ্রহণ ভারতে দেখা যাবে, তাই এর সূতক কালও মান্য হবে। সূতককালে ধর্মীয় কাজ নিষিদ্ধ থাকে, সেইজন্য পিতৃপক্ষের প্রথম দিনে তর্পণের সময় সীমিত থাকবে।

কখন লাগবে এবং কখন শেষ হবে চন্দ্রগ্রহণ

পঞ্জিকা অনুসারে, ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা ৫৮ মিনিটে চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে এবং ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ২৬ মিনিটে শেষ হবে। এটি প্রায় ৩ ঘণ্টা ২৮ মিনিটের গ্রহণ হবে। যেহেতু চন্দ্রগ্রহণ ভারতে দেখা যাবে, তাই এর সূতক কাল মান্য থাকবে। সূতক কাল গ্রহণ শুরু হওয়ার ৯ ঘণ্টা আগে শুরু হয়ে যায়। অর্থাৎ, ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিট থেকে সূতক লাগবে।

তর্পণের জন্য শুভ সময় কী থাকবে

যেহেতু দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটের পর সূতক কাল শুরু হয়ে যাবে এবং তারপরে কোনো ধর্মীয় কাজ করা যাবে না, তাই ৭ সেপ্টেম্বর তর্পণ ও শ্রাদ্ধ করার শুভ সময় সকাল থেকে দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। জ্যোতিষীদের মতে, যদি কেউ সেই দিনই তর্পণ করতে চান, তবে তিনি যেন দুপুরের আগে এই কাজগুলি সম্পন্ন করেন, কারণ সূতকের পরে তর্পণ করা নিষিদ্ধ।

পিতৃপক্ষে কেন তর্পণ করা হয়

পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, পিতৃপক্ষে পূর্বপুরুষেরা পৃথিবীতে আসেন এবং তাদের বংশধরদের থেকে তর্পণ, পিণ্ডদান ও খাদ্য গ্রহণ করেন। এর ফলে তাঁদের আত্মার শান্তি মেলে এবং তাঁরা প্রসন্ন হয়ে তাদের পরিবারকে আশীর্বাদ করেন। মনে করা হয় যে, এই সময়ে যারা তাদের পিতৃপুরুষদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে, তারা জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি লাভ করে এবং পিতৃ দোষও শান্ত হয়।

তর্পণ ও শ্রাদ্ধ কিভাবে করা হয়

তর্পণ সাধারণত পবিত্র নদী, পুকুর বা কোনো জলের উৎসের কাছে করা হয়। এতে জল, তিল, ফুল, কুশ এবং কিছু বিশেষ মন্ত্র ব্যবহার করে পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়। এছাড়াও ব্রাহ্মণ ভোজন ও দানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। অনেকে বাড়িতেও শ্রাদ্ধ কর্ম করেন এবং ব্রাহ্মণদের আমন্ত্রণ করে भोजन করান।

চন্দ্রগ্রহণে কি কি করা উচিত নয়

ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, চন্দ্রগ্রহণের সময় কিছু জিনিস থেকে বিরত থাকা জরুরি। এই সময়ে পূজা-পাঠ করা যায় না, দেবতাদের মূর্তি স্পর্শ করা নিষিদ্ধ, নতুন খাবার রান্না করা হয় না এবং খাবার খাওয়াও যায় না। গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং তাদের এই সময়ে ঘর থেকে বের হওয়া বা খালি চোখে গ্রহণ দেখা থেকে परहेज করা উচিত।

গ্রহণের সূতক কাল কেন গুরুত্বপূর্ণ

সুতক কালকে অശുद्ध সময় হিসাবে ধরা হয়। যেহেতু এই চন্দ্রগ্রহণ ভারতে দেখা যাবে, তাই সূতকের প্রভাব মান্য হবে। সূতককালে কোনো শুভ কাজের অনুমতি নেই। পূজা, ব্রত, তর্পণ, यज्ञ ইত্যাদি কাজ এই সময়কালে স্থগিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে পিতৃপক্ষের প্রথম দিন হওয়া সত্ত্বেও বেশিরভাগ लोग এই দিনে সকাল বা দুপুর পর্যন্ত তাদের পূর্বপুরুষদের তর্পণ অর্পণ করবেন।

পিতৃপক্ষে কি কি করা হয়

পিতৃপক্ষে প্রতিদিন কোনো না কোনো তিথি অনুযায়ী শ্রাদ্ধ করা হয়। যাদের माता-पिता নেই, তারা তাদের মৃত্যুর তারিখ অনুযায়ী শ্রাদ্ধ করেন। আবার, যাদের পিতৃপুরুষদের তারিখ জানা নেই, তারা সর্বপিতৃ অমাবস্যার দিনে তর্পণ করেন। এই বছর এই দিনটি ২১ সেপ্টেম্বর। এই দিনে বেশিরভাগ लोग सामूहिकভাবে পিণ্ডদান এবং তর্পণ করেন।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কেন বিশেষ এই পিতৃপক্ষ

এই বছর পিতৃপক্ষ শুরু হচ্ছে গ্রহণের সাথে, যা একটি বিরল संयोग। এটি ধর্মীয় ও জ্যোতিষশাস্ত্রীয় উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণত গ্রহণের দিনে ধর্মীয় কাজ থেকে परहेज করা হয়, তবে যখন সেই দিনটিই শ্রাদ্ধ পক্ষের শুরুর দিন হয়, তখন श्रद्धालुओं-দের জন্য यह জানা আরও জরুরি হয়ে যায় যে সঠিক সময়ে ही कर्म করা উচিত।

Leave a comment