পুজোর মুখে লাগল আনাজের দামেও আগুন সাধারণ মানুষ নাজেহাল

পুজোর মুখে লাগল আনাজের দামেও আগুন সাধারণ মানুষ নাজেহাল

কলকাতা, ৩১ আগস্ট ২০২৫:

পুজোর আগে বাজারের দাম দেখে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। রুটির মূল আনাজ থেকে শাক-সবজি—সবকিছুতেই দামের ঊর্ধ্বগতি। সামান্য লাউ বা পটলও এখন নাগালের বাইরে, যার কারণে ক্রেতারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

আনাজের দাম আগের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি

সাধারণত ২০-৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হওয়া লাউ এখন ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে অন্য সব শাক-সবজির দামও দ্রুত বাড়ছে। প্রতিদিনের খাদ্য সামগ্রী ক্রেতাদের জন্য এখন সাশ্রয়ী নয়।

চালের দাম এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি

মাস কয়েক আগে নতুন চাল বাজারে আসার পর দাম স্বাভাবিক হবে বলেছিল প্রশাসন। কিন্তু চার-পাঁচ মাস পার হলেও দাম নাগালের বাইরে। আলু ও পেঁয়াজের দাম সামান্য নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, পেঁয়াজের দাম আবারও চড়তে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূলত আনাজের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।

বর্ষণের কারণে ফসলের ক্ষতি

অন্য বছরও বর্ষার সময় আনাজের দাম বেড়ে যায়। এবার টানা বর্ষণে বহু জমিতে জল জমে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি থাকা ফসলও আংশিকভাবে পচে যাচ্ছে। এর ফলে পাইকারি ও খুচরো বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে।

কলকাতার বড় বাজারে দামবৃদ্ধি

কলকাতার কালীঘাট, গড়িয়া, বাঘাযতীন, মানিকতলা, গড়িয়াহাট ও শ্যামবাজারে সব আনাজের কেজি দামের ঊর্ধ্বগতি স্পষ্ট। যেখানে কয়েক সপ্তাহ আগেও ৫০-৬০ টাকা কেজি মিলত, এখন সেই দাম ১০০-১২০ টাকা। বেগুন, কাঁচা লঙ্কা ১৫০ টাকাও ছাড়িয়েছে। পটল, ঢেঁড়শ, ঝিঙে—সবই এখন ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ

গড়িয়াহাটের বাসিন্দা সুকুমার সরকার বলেন, “আমরা নিয়মিত যে আনাজ কিনি, এখন তা কিনতে হাঁসফাঁস অবস্থা হচ্ছে। লঙ্কা বা বেগুন কিনতে পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। টোম্যাটোর দামও চড়ছে। পুজোর আগে সবই নাগালের বাইরে চলে যাবে।” বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে আনতে হচ্ছে, তাই লাভ তো দূরের কথা, টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকারি উদ্যোগে কিছু রেহাই

রাজ্য সরকার ‘সুফল বাংলা’ আউটলেটে ন্যায্যমূল্যে আনাজ বিক্রি করছে। তবে সেখানে সরবরাহ সীমিত এবং দামও নাগালের মধ্যে নেই। পটল, ঢেঁড়শ, ঝিঙের দাম ৬৫ টাকা কেজি। ভিন রাজ্য থেকে আনাজ এনে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে, তবে পরিস্থিতি খুব বদলায়নি।

হোটেল ও রেস্তোরাঁয় দাম বেড়েছে

পুজোর সময় আনাজের দাম হোটেল ও রেস্তোরাঁয় প্রভাব ফেলেছে। অনেক জায়গায় সয়াবড়ি বা বিকল্প ব্যবহার করে পরিস্থিতি সামলানো হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, “দাম এমন বেড়ে গেছে যে প্রতিদিনের বাজার সামলানো দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে গেছে।

Leave a comment