পুনেতে একটি হাই-প্রোফাইল রেভ পার্টিতে পুলিশের হানার পর মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই অভিযানে এনসিপি (শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী)-র নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী একনাথ खडসের জামাতা প্রাঞ্জল খেওলকরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তল্লাশির সময় মাদক দ্রব্য—গাঁজা, মদ, ২.৭ গ্রাম কোকেনের মতো পদার্থ এবং হুঁকো—জব্দ করা হয়েছে। এই তল্লাশি পুনেতে খেওলকরের অ্যাপার্টমেন্টে চালানো হয়। এই ঘটনার রাজনৈতিক মোড় নেয় যখন একনাথ खडসে এবং তাঁর মেয়ে রোহিনী खडসে প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দেন।
স্বামীর সমর্থনে এগিয়ে এলেন রোহিনী
প্রাঞ্জল খেওলকরের গ্রেফতারির পর তাঁর স্ত্রী রোহিনী खडসে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে তিনি নিজে আদালতে স্বামীর হয়ে লড়বেন। পেশায় আইনজীবী রোহিনী বলেন যে মামলাটি বিচারাধীন, তাই এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতেও পোস্ট করে আইন ও বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা প্রকাশ করেছেন এবং লিখেছেন যে সময় এলে সত্য অবশ্যই সামনে আসবে।
প্রাক্তন মন্ত্রী একনাথ खडসেও এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে যদি তাঁর জামাতাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসানো হয়ে থাকে, তাহলে তিনি চুপ করে থাকবেন না। তাঁর এই বিবৃতির পর রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বেড়েছে। অনেক নেতারাই এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন এবং ধীরে ধীরে এটি রাজনৈতিক রঙ নিয়েছে।
কবে এবং কীভাবে এই ঘটনা প্রকাশ্যে এল
পুনে পুলিশ শনিবার গভীর রাতে একটি অ্যাপার্টমেন্টে চলা রেভ পার্টির গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দেয়। সেই সময় সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে দুজন মহিলাও আছেন। সমস্ত অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করার পর ২৯ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ এনডিপিএস (NDPS) আইন এবং অন্যান্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এই তল্লাশির পর থেকে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে।
কে এই রোহিনী खडসে?
রোহিনী खडসে মহারাষ্ট্রের বর্ষীয়ান নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী একনাথ खडসের মেয়ে। পেশায় আইনজীবী রোহিনীর এটি দ্বিতীয় বিবাহ। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি তাঁর ছোটবেলার বন্ধু প্রাঞ্জল খেওলকরকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তিনি এনসিপি (শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী)-র মহিলা উইংয়ের প্রদেশ अध्यक्षा এবং রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
রোহিনী মুম্বইয়ের ল’ কলেজ থেকে এলএলবি (LLB) এবং পুনের ওয়াই.এম. ল’ কলেজ থেকে এলএলএম (LLM) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২০১৫ সালে তিনি জলগাঁও জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের अध्यक्षा-ও ছিলেন।
নির্বাচনী অভিজ্ঞতাও বেশ মজবুত
রাজনৈতিক জীবনে রোহিনী खडসের নির্বাচনী ময়দানেও অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১৯ সালে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র টিকিটে মুক্তাইনগর থেকে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যদিও তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি রাজনীতি থেকে দূরে থাকেননি। ২০২৪ সালে তিনি এনসিপি (এসপি)-র টিকিটে আবারও মুক্তাইনগর থেকে নির্বাচনে লড়েন।
রেভ পার্টি কান্ড এবং প্রাঞ্জলের গ্রেফতারির পর যেভাবে রোহিনী প্রকাশ্যে এসে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা তাঁকে রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্তরে একটি নতুন পরিচিতি দিতে পারে। এখন সকলের নজর আদালতের কার্যক্রম এবং এই হাই-প্রোফাইল মামলার রাজনৈতিক মোড়গুলির দিকে।