রাজস্থানে সরকারি স্কুলের ছাদ ধসে ৪ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু

রাজস্থানে সরকারি স্কুলের ছাদ ধসে ৪ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু

রাজস্থানের ঝালাওয়াড় জেলার একটি সরকারি স্কুলের ক্লাসরুমের ছাদ ধসে ৪ জন ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় প্রায় ৬০ জন ছাত্র উপস্থিত ছিল। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসা চলছে।

Rajasthan: রাজস্থানের ঝালাওয়াড় জেলার মনোহর থানা এলাকার পিপলোদি গ্রামে একটি সরকারি স্কুলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখানে, রাজ্য উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদটি ভেঙে পড়ে যখন শিশুরা ক্লাসের ভিতরে পড়াশোনা করছিল। এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই চার শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে এবং আরও অনেকে গুরুতর আহত হয়েছে।

প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত ছিল

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, যখন ছাদ ধসে পড়ে তখন ক্লাসে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। আকস্মিক এই দুর্ঘটনায় পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। ধ্বংসস্তূপের নিচে ২৫ জনের বেশি শিশু চাপা পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা সাহায্যের জন্য ছুটে আসে এবং নিজেদের উদ্যোগে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে লেগে যায়।

ছাদ ধসে পড়তেই হাহাকার শুরু হয়

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ধ্বংসস্তূপ এতটাই বেশি ছিল যে মনে হচ্ছিল স্কুলটি যেন একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কান্নাকাটির মধ্যে স্থানীয় গ্রামবাসী ও স্বজনরা শিশুদের ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করার চেষ্টা করেন। প্রশাসন ও পুলিশ দলকেও দ্রুত ঘটনাস্থলে ডাকা হয়।

গুরুতর আহত শিশুদের চিকিৎসা চলছে

ছাদ ধসে আহত অনেক শিশুকে কাছের একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, সব আহতকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর প্রয়োজনে বড় হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের উদ্বেগ প্রকাশ

রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এই দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শোক প্রকাশ করে বলেন, তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন যেন আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে এবং মৃতের পরিবার এই অসহনীয় দুঃখ সহ্য করার শক্তি পায়।

শিক্ষামন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের ঘোষণা করেছেন

রাজস্থান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ারও এই দুর্ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সরকারের পক্ষ থেকে সকল আহতদের চিকিৎসা সম্পূর্ণরূপে সরকারি খরচে করা হবে। এছাড়াও, স্কুলটির ছাদ কীভাবে ধসে পড়ল, তার জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্মাণের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে

এই দুর্ঘটনা সরকারি স্কুলের ভবনের নিরাপত্তা এবং নির্মাণের গুণগত মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুল ভবনটি পুরনো ছিল এবং অনেক জায়গায় স্যাঁতসেঁতে ও ফাটল আগে থেকেই ছিল, কিন্তু কোনো মেরামত করা হয়নি। এখন যখন এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তখন প্রশাসনের গাফিলতিও প্রকাশ্যে এসেছে।

গ্রামবাসী ও অভিভাবকরা দোষী আধিকারিক ও নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, সময় থাকতে স্কুল ভবনের পরীক্ষা বা মেরামত করা হলে এই নিষ্পাপ প্রাণগুলো যেত না।

Leave a comment