জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফার পর দেশে উপরাষ্ট্রপতি পদ নিয়ে রাজনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। নির্বাচন কমিশন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, যার ফলে এখন প্রার্থীদের নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
নয়া দিল্লি: ভারতের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি পদ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফার পর নির্বাচন কমিশন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে একটি নতুন নাম দ্রুত আলোচনায় আসছে—রামনাথ ঠাকুর, যিনি বিহারের প্রবীণ নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরী ঠাকুরের পুত্র।
সম্প্রতি বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামনাথ ঠাকুরের সাক্ষাৎ জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছে। যদিও বিজেপি এখনও পর্যন্ত এনডিএ-র পক্ষ থেকে উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থীর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেনি, তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, রামনাথ ঠাকুরের নাম এই পদের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
কে এই রামনাথ ঠাকুর?
রামনাথ ঠাকুর ভারতীয় রাজনীতিতে একজন পরিচ্ছন্ন ও ভারসাম্যপূর্ণ ভাবমূর্তির নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-এর প্রবীণ নেতা এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে তিনি রাজ্যসভার সাংসদও। রামনাথ ঠাকুরের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ২০০৫ সালে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন বিহার সরকারে, যখন তাঁকে আখ উন্নয়ন মন্ত্রী করা হয়। ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি বিহার সরকারের कैबिनेट মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন।
তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় হল তাঁর বাবা কর্পূরী ঠাকুরের সামাজিক ন্যায়বিচার-ভিত্তিক আদর্শের সঙ্গে তাঁর সংযোগ। কর্পূরী ঠাকুরকে সম্প্রতি মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে, যা রামনাথ ঠাকুরের রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য কেন তিনি শক্তিশালী দাবিদার?
রামনাথ ঠাকুরের নাম উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য বেশ কয়েকটি কারণে উপযুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে:
- সামাজিক ন্যায়বিচারের পটভূমি: তিনি অতি পিছড়া বর্গ (ইবিসি) থেকে এসেছেন, যা বিহার এবং দেশের অন্যান্য অংশে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক গোষ্ঠী।
- রাজনৈতিক ভারসাম্য: রামনাথ ঠাকুরকে নির্বাচন করে এনডিএ, বিশেষ করে বিজেপি, বিহারে জেডিইউকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে পারে। এই বছরের শেষে বিহার বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এবং এই পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে লাভজনক হতে পারে।
- পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি: তাঁর রাজনৈতিক জীবন এখনও পর্যন্ত কোনও বিতর্ক থেকে দূরে, যা বিরোধীদের জন্য তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানো কঠিন করে তুলতে পারে।
জেপি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাতের অর্থ কী?
রামনাথ ঠাকুর এবং জেপি নাড্ডার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট আলোচনা চলছে। কিছু সূত্রের দাবি, এই সাক্ষাৎ বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে ছিল, তবে সময় এবং প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে এটিকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাক্ষাতের মাধ্যমে এনডিএ এই ইঙ্গিত দিতে চায় যে তারা বিহারের সামাজিক ও রাজনৈতিক সমীকরণগুলো বুঝে সামনের কৌশল তৈরি করছে।