সুপ্রিম কোর্টে আজ ডিএ মামলার শুনানি বকেয়া ২৫% DA মিলবে কবে চূড়ান্ত রায়ের দিকেই তাকিয়ে লাখো সরকারি কর্মী

সুপ্রিম কোর্টে আজ ডিএ মামলার শুনানি বকেয়া ২৫% DA মিলবে কবে চূড়ান্ত রায়ের দিকেই তাকিয়ে লাখো সরকারি কর্মী

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বহুলচর্চিত ডিএ মামলার শুনানি

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হচ্ছে আজ, ৫ আগস্ট, সোমবার। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে উঠছে এই মামলার পরবর্তী পর্ব। প্রায় এক দশকের পুরনো এই ডিএ বিতর্কে আজকের শুনানি হতে পারে অন্যতম মোড় ঘোরানো দিন।

২৫% বকেয়া মেটাতে সময় চেয়েছিল রাজ্য, কী বলবে আদালত?

গত ১৬ মে, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল—ছ’সপ্তাহের মধ্যে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্যকে। কিন্তু এরপর রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে জানায়, এই অর্থ এককালীন দেওয়া সম্ভব নয়। বরং রাজ্য চায়, এই অর্থ আদালতের তত্ত্বাবধানে জমা রাখতে, যতক্ষণ না মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হচ্ছে। সেই প্রস্তাবও আজ খতিয়ে দেখবে আদালত।

বকেয়া DA নিয়ে রাজ্যের অবস্থান, আর্থিক সংকটের যুক্তি তুলে ধরা

রাজ্য সরকারের দাবি, লক্ষ লক্ষ কর্মী ও পেনশনভোগীদের বকেয়া ডিএ দিতে গেলে প্রয়োজন প্রায় ২৩,৫০০ কোটি টাকা। যা ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে কোথাও বরাদ্দ নেই। এমন বিপুল অর্থ জোগাড় করতে গেলে কেন্দ্রের অনুমতি নিয়ে ঋণ তুলতে হবে। তা ছাড়া রাজ্য স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ডিএ বাধ্যতামূলক কোনও সংবিধানগত অধিকার নয়। এটি মূলত ‘ঐচ্ছিক’, এবং আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী দেওয়া হয়।

‘রাজ্য চাইলে মামলাটি এখনই খারিজ করতে পারি’—সুপ্রিম কোর্টের কড়া বার্তা

গত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, রাজ্যের একাধিক যুক্তি আদালতের ধৈর্য পরীক্ষা করছে। তারা চাইলে মামলাটি সেই মুহূর্তেই খারিজ করে দিতে পারত। কিন্তু সেটা না করে আদালত চূড়ান্ত রায়ের জন্য সময় দিয়েছে আগস্টে। ফলে আজকের দিনটি একাধিক সরকারি কর্মচারীর কাছে আশার আলো ও উৎকণ্ঠার মিশেল।

ডিএ না মেটানোয় আদালত অবমাননার মামলাও দায়ের হয়েছে

একাধিক সরকারি কর্মচারী সংগঠন রাজ্যের বিরুদ্ধে Contempt of Court বা আদালত অবমাননার মামলা করেছে। কারণ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডিএ মেটানো হয়নি। আজকের শুনানিতে সেই মামলাগুলির অবস্থানও খতিয়ে দেখবে শীর্ষ আদালত। ফলে মামলার পরিধি যে অনেকটাই বিস্তৃত হচ্ছে, তা স্পষ্ট।

রাজ্যের যুক্তি: কেন্দ্রীয় অনুদান কমেছে, চাপ বেড়েছে রাজ্যের উপর

রাজ্য আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার বহু প্রকল্পে অনুদান কমিয়ে দিয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে রাজ্যের কোষাগারে। এই আর্থিক চাপের মধ্যেও রাজ্য ১৮% হারে ডিএ দিচ্ছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় কর্মীরা পান ৫৫% হারে ডিএ, ফলে কেন্দ্র-রাজ্য ফারাক দাঁড়ায় ৩৭%। এই ফারাক পূরণ রাজ্যের পক্ষে কার্যত অসম্ভব, বলেই দাবি আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির।

ডিএ মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন কয়েক লক্ষ কর্মীর ভবিষ্যৎ

সকলের নজর এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকেই। আদৌ বকেয়া ২৫% ডিএ এককালীন মিলবে, নাকি রাজ্যকে আরও সময় দেবে আদালত—এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজকের শুনানিতে। রায় যাই হোক, তা প্রভাব ফেলবে রাজ্যের প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক পরিসরে।

বকেয়ার অঙ্ক শুনলে মাথা ঘুরবে, কত টাকা বাকি এখনো?

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শুধু কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ-র পরিমাণ দাঁড়ায় ১১,৮৯০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রেও রয়েছে ১১,৬১১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার বকেয়া। এই বিপুল অর্থ কোথা থেকে আসবে? তার উত্তরও খুঁজতে হচ্ছে আজকের শুনানিতেই।

Leave a comment