রাজ্যের হলফনামা জমা:পশ্চিমবঙ্গের ডিএ মামলায় ফের নতুন মোড়। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সর্বোচ্চ আদালতে রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, দেশের মোট ১০টি রাজ্য তাদের সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়ার ক্ষেত্রে AICPI (All India Consumer Price Index) মেনে চলে না। তাই পশ্চিমবঙ্গও আলাদাভাবে ডিএ নির্ধারণের অধিকার রাখে।
আদালতে কর্মীদের সওয়াল
এই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি বিপুল মনুভাই পাঞ্চোলির ডিভিশন বেঞ্চে। সরকারি কর্মীদের পক্ষে হাজির ছিলেন আইনজীবী করুণা নন্দী। তিনি রাজ্যের যুক্তি খারিজ করতে চাইলে আদালত জানায়, কর্মীদেরও এখনও হলফনামা জমা দেওয়ার সময় রয়েছে। সেই সুযোগে তাঁরা তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন। ফলে রায় ঘোষণায় আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।
দীপাবলির পর রায়?
শোনা যাচ্ছে, আসন্ন দীপাবলির ছুটি শেষ হওয়ার পরেই এই মামলায় চূড়ান্ত রায় দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। যদিও কর্মীদের পক্ষে থাকা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আশাবাদী, চলতি বছরের মধ্যেই রায় ঘোষণা হবে। গত ৮ সেপ্টেম্বরই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে, তবে রায়দান স্থগিত রেখেছিল কোর্ট।
হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কলকাতা হাইকোর্ট সরকারি কর্মীদের পক্ষে রায় দিয়ে জানিয়েছিল, ডিএ সরকারি কর্মীদের আইনসিদ্ধ অধিকার। কেন্দ্রীয় হারে তা দিতে হবে। সেই সঙ্গে ২৫ শতাংশ বকেয়া মেটানোর নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। তবে রাজ্য সরকার সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় এবং অতিরিক্ত সময় চায়। তখন থেকেই মামলাটি সর্বোচ্চ আদালতে ঝুলে রয়েছে।
দুই পক্ষের যুক্তি
রাজ্যের দাবি, ডিএ কখনও কর্মীদের মৌলিক অধিকার নয়, বরং রাজ্যের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী ভাতা নির্ধারিত হবে। অন্যদিকে কর্মীদের আইনজীবীদের বক্তব্য, ডিএ আইনি অধিকার এবং দেশের বেশিরভাগ রাজ্যই AICPI মেনে সরকারি কর্মীদের ডিএ দেয়। পশ্চিমবঙ্গ কেন তার ব্যতিক্রম হবে?
রাজ্যের সরকারি কর্মীরা বহুদিন ধরেই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘিরে তাঁদের মধ্যে প্রবল আগ্রহ। দীপাবলির পর এই মামলার নিষ্পত্তি হলে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক সুরক্ষা নির্ভর করবে সেই রায়ের উপরই। এখন সকলের নজর সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের দিকে।